নতুন ধানে নতুন প্রাণে, চলো মাতি পিঠার ঘ্রাণে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের পিঠা উৎসবে চবি বন্ধুসভার স্টলছবি: বন্ধুসভা

‘সুস্থ সংস্কৃতির জন্য যাহা মোদের প্রয়োজন, আমরা আজকে তাহা করিয়াছি আয়োজন।’ গত ৩০ জানুয়ারি ‘নতুন ধানে নতুন প্রাণে, চলো মাতি পিঠার ঘ্রাণে’ প্রতিপাদ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছে পিঠা উৎসব। দিনব্যাপী এই আয়োজনে জোটের অন্যতম সদস্য হিসেবে অংশ নেয় চবি বন্ধুসভা।

জোটের অন্য সংগঠনগুলো হলো অঙ্গন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি মঞ্চ, ভিন্নষড়জ ও আমন্ত্রিত সংগঠন রঁদেভু, লোকজ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের পিঠাপুলির পসরা সাজিয়েছেন। আদিবাসীদের ভিন্ন স্বাদের পিঠাও উপভোগ করেন সবাই।

বিকেল ও সন্ধ্যায় ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইয়াহিয়া আখতার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চবি বন্ধুসভার উপদেষ্টারা।

প্রতিটি স্টলেই ছিল শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। চবি বন্ধুসভার স্টলে ২০ থেকে ২৫ রকমের পিঠার সমাহার রাখা হয়। পাকন পিঠা, পুলি পিঠা, দুধচিতই, ঝালপিঠা, পাকোড়া, নুডলস পাকোড়া, ডিম পিঠা, পায়েস, পুডিং, জর্দা, কমলা সুন্দরী, ঝাইপিঠা, বিন্নি চালের কলা পিঠা, সুজির রসবড়া, নারকেল পুলি, চুটকি পিঠা, ক্ষীরের পাটিসাপটা, নারকেলের পাটিসাপটা, হাতঝাড়া পিঠা, গোলাপ পিঠা, জামাই পিঠা, সুজির হালুয়া, শামুক পিঠা, হাতঝালি পিঠাসহ অসংখ্য পিঠায় সাজানো ছিল স্টলগুলো।

বন্ধুসভার স্টলে প্লাস্টিকের ব্যবহার সীমিত রেখে পিঠাপ্রেমীদের সব ধরনের পিঠা কলাপাতায় পরিবেশন করা হয়। বন্ধুরা চেষ্টা করেছেন স্টলটিকে বরাবরের মতো বাঙালি ধাঁচে তৈরি করতে।

চবি বন্ধুসভার স্টলে শিক্ষার্থীদের ভিড়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইয়াহিয়া আখতার বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭ সাল থেকে সাংস্কৃতিক জোট আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করে আসছে, যা একটি সুন্দর ও ভালো উদ্যোগ। এ রকম লোকসংস্কৃতি ধারণ করে এমন উৎসব আয়োজনে আমি সন্তুষ্ট।’

চবি বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক আলী আকরাম বলেন, ‘নিজ বাড়ি থেকে দূরে যেসব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে রয়েছে, তাঁরা পিঠা উৎসবের মাধ্যমে বাড়িতে বানানো পিঠার স্বাদ নিতে পেরেছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠা সম্পর্কেও জানতে পেরেছে।’

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহনাফ হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে প্রতিবছর শীতকালে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। উৎসব নিয়ে এবারও আগ্রহ ছিল তুমুল। দুই সপ্তাহ আগে থেকেই চবি বন্ধুসভা প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে। সকালে স্টলে গিয়ে দেখলাম, বন্ধুসভার বন্ধুরা নিজেরা পিঠা বানিয়ে নিয়ে আসেন। সবাই শাড়ি ও পাঞ্জাবি পরে আসায় উৎসব আরও জমে ওঠে। সারা দিন স্টলে পিঠা বিক্রির অভিজ্ঞতাও বেশ মজার ছিল। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করতে পেরে আনন্দিত। পুরো দিনটাই আমাদের জন্য আনন্দের ছিল।’

পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, চবি বন্ধুসভা