‘নজরুল ও রবীন্দ্রনাথ আমাদের প্রেরণার উৎস’

দিনাজপুর বন্ধুসভার উদ্যোগে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপনছবি: বন্ধুসভা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালির মানসপটে সব সময়ই বিরাজমান। বাঙালির জীবনের যত ভাবনা, বৈচিত্র্য আছে, তার পুরোটাই লেখনী, সুর আর কাব্যে তুলে ধরেছেন কবিগুরু। তাঁর সাহিত্যকর্ম, সংগীত, জীবনদর্শন, মানবতা, ভাবনা—সবকিছুই সত্যিকারের বাঙালি হতে এবং সত্যিকারের মানুষ হতে অনুপ্রেরণা দেয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিল্প-সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় বিচরণ করা ব্যক্তিত্ব। গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, গান, ছোটগল্প, চিত্রকর্মসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনন্য দ্যুতি ছড়িয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও তিনিও ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তাঁর কবিতা, গান ও সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তাঁর কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলেছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নজরুলের গান ও কবিতা ছিল অনন্য প্রেরণার উৎস।

প্রেরণাদায়ী, দ্রোহ, প্রেম ও সৃষ্টিশীল বাংলার অনন্য দুই মনীষী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ‘হৃদয়ে রবীন্দ্র, চেতনায় নজরুল’ শিরোনামে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপন করে দিনাজপুর বন্ধুসভা। গত ২৯ মে প্রথম আলোর দিনাজপুরে অফিসে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

সমবেত কণ্ঠে রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আয়োজন। শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রথম আলোর দিনাজপুর প্রতিনিধি শৈশব রাজু বলেন, ‘নজরুল ও রবীন্দ্রনাথ আমাদের প্রেরণার উৎস। আমরা কি আমাদের হৃদয়ে এবং চেতনায় এই মনীষীদের ধারণ করতে পেরেছি? যদি এখনো আমরা পিছিয়ে থাকি, তবে আজ থেকেই আমাদের পথচলা শুরু হোক।’

অনুষ্ঠানে আলোচনার পাশাপাশি বন্ধুদের গান, নাচ ও কবিতা আবৃত্তিতে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বন্ধুরা পালাক্রমে বিদ্রোহী কণ্ঠে ধারণ করে নজরুলের জাগরণী কবিতা, আবার একই মঞ্চে বেজে ওঠে কবিগুরুর অমর সুর। নাচ, গান, বাঁশির সুর ও কবিতা আবৃত্তিতে অংশ নেন সহসভাপতি সুব্রত সরকার, কার্যকরী সদস্য মুনিরা শাহানাজ চৌধুরী, বন্ধু জুঁই আফরোজ, ডালিম কুমার, সদীপ্ত সরকারসহ অন্যরা।

সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চন্দ্র অধিকারী বলেন, ‘বাংলার অমর সৃষ্টি এই মনীষীগণ; যাঁদের সৃষ্টি আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। তাই আমরা তাঁদের চেতনায় দীপ্তমান হয়ে আলো ছড়াতে চাই।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিয়ানা চৌধুরী, পাঠচক্র ও পাঠাগার সম্পাদক সুম্মা মেসবাহুন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ব্রততী বিশ্বাস, তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক দীপু রায়সহ আরও অনেকে।

সভাপতি, দিনাজপুর বন্ধুসভা