জয়দেবপুর জংশনে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করল গাজীপুর বন্ধুসভা

জয়দেবপুর জংশনে যাত্রীদের সুপেয় পানি পানের ব্যবস্থা করে দিয়েছে গাজীপুর বন্ধুসভাছবি: বন্ধুসভা

গাজীপুরের জয়দেবপুর জংশন থেকে প্রতিদিন প্রায় আট হাজার যাত্রী ঢাকা, উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের অনেক জেলায় যাতায়াত করেন। এত জনসমাগম থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনে যাত্রীদের পান করার জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা ছিল না। দীর্ঘদিন আগে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পানি পানের জন্য কাঠামো করে দিয়ে গেলেও সঠিক ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটি ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল।

সেই পরিত্যক্ত কাঠামোটি সম্পূর্ণ সংস্কার করে যাত্রীদের সুপেয় পানি পানের ব্যবস্থা করে দিয়েছে গাজীপুর বন্ধুসভা। প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি ভালো কাজের অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ। পানি পানের স্থান, নিষ্কাশনব্যবস্থা পুরোপুরি সংস্কার করে স্থানটির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে দেন বন্ধুরা। পাশাপাশি পানি পানের স্থানের পেছনের দেয়ালটির শোভাবর্ধন করে সেখানে ‘ট্রেন আপ–ডাউন শিডিউল’ ও মসজিদের নামে ব্যানার লাগিয়ে দেওয়া হয়।

জয়দেবপুর জংশনে সুপেয় পানির ব্যবস্থা
ছবি: বন্ধুসভা

এ বিষয়ে জয়দেবপুর জংশনের স্টেশনমাস্টার হানিফ আলী বলেন, ‘বন্ধুসভার এ কাজ স্টেশনের যাত্রীসাধারণের জন্য স্বস্তি বয়ে আনবে। স্টেশনে এমন একটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করায় আমরা অত্যন্ত খুশি ও কৃতজ্ঞ। এটি রক্ষণাবেক্ষণে আমরা সর্বদা সচেষ্ট থাকব।’

বন্ধুসভার উপদেষ্টা অধ্যাপক অসীম বিভাকর বলেন, ‘গাজীপুর বন্ধুসভা সব সময় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় স্টেশনে পরিত্যক্ত অবস্থায় ব্যবহারের অনুপযুক্ত পানি পানের স্থানটি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে সেটি সংস্কার করে জনসাধারণকে সুপেয় পানি পানের ব্যবস্থা করে দেয়। বন্ধুসভার এই জনকল্যাণমুখী কাজ সবার জন্য নিদর্শন হয়ে থাকবে।’

সুবর্ণশিশুদের সংগঠন মুসাফির স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান হোসেন বলেন, ‘একটি ৫০০ এমএল পানির বোতল কিনতে ২০ টাকা খরচ করতে হয়, যা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই এই উদ্যোগ যুগোপযোগী এবং খুবই কার্যকর। কারণ, জয়দেবপুর স্টেশনটি অত্যন্ত জনবহুল ও ব্যস্ততম জায়গা। বন্ধুসভার একটি ভালো কাজের সুফল লক্ষ লক্ষ মানুষ পাবে। এ ছাড়া ট্রেন শিডিউলটির মাধ্যমে জনসাধারণ উপকৃত হবে।’

কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় পানি পান করে স্বস্তি প্রকাশ করে স্টেশনের পথচারী মরিয়ম বেগম বলেন, ‘এত দিন অনেক অসুবিধা আছিল পানির। সব সময় কিন্না খাইতে পারি না। লগে বোতল থাকলেও পানি নেওয়ার জায়গা আছিল না। এমন ব্যবস্থা দেইখা আমরা খুশি। আমাগো অনেক বড় অসুবিধা কাইটা গেল।’

একটি ভালো কাজ কার্যক্রম শেষে গাজীপুর বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

স্টেশনে কর্মরত ঝাড়ুদার হাকিম মিয়া বলেন, ‘কাজকাম কইরা হাত–মুখ ধুয়ার জায়গাও ছিল না। পানি খাইতে স্টেশনের বাইরে যাওন লাগত। এখন স্টেশনের ভেতরেই পানির ব্যবস্থা হওয়ায় আমরা সবাই খুশি। মাইনষের দোয়া পাইবেম আপনারা।’

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর বন্ধুসভার সভাপতি উম্মে কুলসুম ইস্তিলা, সহসভাপতি সজীব চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আরাফাত মণ্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক রাইসুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মারফুয়া সিয়াম, দপ্তর সম্পাদক মৃদুল আকন্দ, কার্যনির্বাহী সদস্য সামিউল ইসলাম, বন্ধু তানভীর হাসান, সাব্বির আহমেদ, রিফাত রায়হান, ঝর্ণা আক্তার, মেহেদী হাসান, মোসলেমা খাতুনসহ অন্য বন্ধুরা।

সহসভাপতি, গাজীপুর বন্ধুসভা