রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আলোচিত ছোটগল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘কাবুলিওয়ালা’। ১৮৯২ সালে প্রকাশিত হওয়া ছোটগল্পটি কবিগুরুর অনবদ্য সৃষ্টি। তিনি এ গল্পে ফুটিয়ে তুলেছেন কীভাবে সময়, পরিবেশ, আর্থিক অবস্থা ইত্যাদির ঊর্ধ্বে পৃথিবীর সব মানুষের ভালোবাসা ও স্নেহ একই রকম হয়। ফুটিয়ে তুলেছেন মেয়ের প্রতি বাবার স্নেহ ও ভালোবাসার কথা।
আফগানিস্তানের কাবুল থেকে ভাগ্যানুসন্ধানে আসা ফল বিক্রেতা রহমত শেখ। তিনিই গল্পের প্রধান চরিত্র। উত্তম পুরুষে বর্ণিত গল্পটির কথক একজন বাঙালি লেখক। তাঁর ছোট মেয়ে মিনি।
‘কাবুলিওয়ালা, ও কাবুলিওয়ালা, তোমার ও ঝুলির ভিতর কী।’
এভাবেই কাবুলিওয়ালার সঙ্গে পরিচয় হয় মিনির। তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। একসময় কারাগারে যেতে হয় কাবুলিওয়ালাকে। ফিরে এসে দেখেন মিনির বিয়ে হচ্ছে। মিনি কাবুলিওয়ালাকে চিনতে পারে না। মিনির বাবা, বাঙালি লেখক জানতে পারেন কাবুলেও তিনি মিনির মতো একটি মেয়ে রেখে এসেছিলেন। কাবুলিওয়ালা উপলব্ধি করেন, হয়তো তাঁর মেয়েটিও এখন বিয়ের উপযুক্ত হয়েছে। এত দিন পরে হয়তো বাবাকেও ভুলে যেতে পারে। তখন মিনির বাবা বিয়ের খরচের একটা অংশ তাঁকে দিয়ে দেশে যেতে বলেন। কথকের ভাষায়, ‘যেমন মনে করিয়াছিলাম তেমন করিয়া ইলেকট্রিক আলো জ্বালাইতে পারিলাম না, গড়ের বাদ্যও আসিল না, অন্তঃপুরে মেয়েরা অত্যন্ত অসন্তোষ প্রকাশ করিতে লাগিলেন, কিন্তু মঙ্গল-আলোকে আমার শুভ উৎসব উজ্জ্বল হইয়া উঠিল।
বিখ্যাত এ ছোটগল্পটি নিয়ে পাঠচক্রের আসর করে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা। ১৬ মে রাত ১০টায় অনলাইন গুগল মিট অ্যাপে এটি অনুষ্ঠিত হয়। বন্ধুরা গল্পটি পাঠের সময় মেয়ের প্রতি বাবার স্নেহ ও ভালোবাসা নিয়ে আলোচনা করেন।
বলা হয়ে থাকে, রবীন্দ্রনাথ মিনি চরিত্রটি এঁকেছিলেন তাঁর মেয়ে মাধুরীলতাকে মনে রেখে। বাবা হিসেবে লেখক রবীন্দ্রনাথের মাধুরীলতার প্রতি কেমন স্নেহ ও ভালোবাসা ছিল? এ প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক নকীবুল হক পাঠ করেন আহমেদ ইশতিয়াক রচিত নিবন্ধ ‘রবীর মাধুরীলতা’। এটি পাঠের পর বন্ধুরা আরও আলোচনা করেন তৎকালীন সমাজব্যবস্থায় বিয়ে ও যৌতুক নিয়ে।
অনলাইন পাঠচক্রে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি আবু রায়হান, সহসভাপতি ইসরাত তারিফা ও সাধারণ সম্পাদক নাহিন সুলতানাসহ অন্য বন্ধুরা।
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, নোবিপ্রবি বন্ধুসভা