সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলার যমুনা নদীর তীরের সাউততলা গ্রামে বাস করেন এক বৃদ্ধ মা (৮৫)। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অসুস্থ, শয্যাশায়ী ও মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁর দেখাশোনা বা খরচ চালানোর মতো তেমন কেউ নেই। একমাত্র আশ্রয়স্থল ভাই কোপিল মিয়া। কোপিল মিয়া নিজেও অসুস্থ, লাঠিতে ভর দিয়ে চলাফেরা করেন। বোনের সেবাশুশ্রূষার খরচ চালাতে আয়রোজগারও তেমন করতে পারেন না।
বৃদ্ধ মায়ের কথা জানতে পেরে ওনার পাশে দাঁড়িয়েছে পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি বন্ধুসভা। ২২ অক্টোবর ইউনিভার্সিটি থেকে ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সাউততলা গ্রামে পৌঁছান বন্ধুসভার সদস্যরা। মায়ের জন্য নিয়ে যান বেডশিট, বালিশের কভার, ফ্যান, কম্বল, মগ, বালতি, বদনা, ওয়াশিং পাউডার, গোসলের সাবান, টুথপেস্ট, ব্রাশসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী।
প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘একটি ভালো কাজ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি বন্ধুসভার এই উদ্যোগ। যাওয়ার আগে বন্ধুরা ফোনকলের মাধ্যমে জানতে পারেন, বৃদ্ধ মা ভারী কোনো খাবার খেতে পারেন না। তাই সঙ্গে করে নিয়ে যান খাওয়ার উপযোগী বিভিন্ন শুকনা খাবার। পাশাপাশি ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী আগামী এক মাসের ওষুধ ও স্যালাইন সরবরাহ করেন বন্ধুরা। সরবরাহকৃত সব জিনিস, খাবার ও ওষুধ হস্তান্তর করা হয় প্রতিবেশী এক মধ্যবয়সী গৃহিণীর হাতে, যিনি তাঁর দেখাশোনা করেন।
বিদায়ের সময় সভাপতি তুষার চন্দ্র অসুস্থ মাকে আশ্বস্ত করেন, তাঁর যেকোনো প্রয়োজনে পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি বন্ধুসভা পাশে থাকবে।
এই মহতী উদ্যোগে অংশগ্রহণ করেন পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি বন্ধুসভার বন্ধু ও উপদেষ্টারা। সম্পূর্ণ কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি তুষার চন্দ্র, সাধারণ সম্পাদক নিগম সেন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, অর্থ সম্পাদক অভিষেক সরকার, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক ইসতিয়াক আহম্মেদ ও কার্যনির্বাহী সদস্য রাইসা রাসমিন।