কবি আল মাহমুদের প্রয়াণদিবসে ‘সোনালী কাবিন’ নিয়ে পাঠচক্র

নোবিপ্রবি বন্ধুসভার পাঠচক্রছবি: সংগৃহীত

‘আমি চলে গেলে এ পারে আঁধারে কেউ থাকবে না আর;
সব ভেসে গেছে এবার তবে কি ভাসাব অন্ধকার? আলো-আঁধারির এই খেলা তবে আমাকে নিয়েই শেষ
আমার শরীর কাঁপছে যেমন কাঁপছে বাংলাদেশ।’

কিংবদন্তি কবি আল মাহমুদ কবিতার মতোই আমাদেরকে একটা অন্ধকারে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভোগার পর ফাল্গুনের তৃতীয় রাতে দপ করে নিভে গিয়েছিল বৈচিত্র্যময় কবি-জীবনের নিভু নিভু শেষ আলোটুকু।

কিন্তু কবিদের কি আসলেই মৃত্যু হয়? এই ধুলোমাটির পৃথিবী ছেড়ে গেলেও তাঁদের সৃষ্টি তাঁদেরকে বাঁচিয়ে রাখে পাঠক মনে, বছরের পর বছর। আল মাহমুদ চলে যাওয়ার পাঁচ বছর হলেও তিনি আজও বেঁচে আছেন পাঠকের মনে। তাঁর গল্পে, কবিতায়, উপন্যাসে, ছড়ায়। পাখির কাছে ফুলের কাছে, আরব্য রজনীর রাজহাঁস, সোনালী কাবিন, লোক লোকান্তর, কালের কলস তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে পাঠকের মনে। বাঁচিয়ে রাখবে আরও শত শত বছর। কিংবা হাজার বছর!

আল মাহমুদ তাঁর অমর সৃষ্টি ‘সোনালী কাবিন’ প্রকাশের চল্লিশ বছর পর এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘একটা বই ৪০ বছর ধরে সমাদৃত হচ্ছে। এর সনেটগুলো পড়ে আজও পাঠক আপ্লুত হচ্ছেন—একজন কবির জন্য এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে!’ ৪০ বছর পার হয়ে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে আজও পাঠককে আপ্লুত করছে সোনালী কাবিন।

কবির পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘সোনালী কাবিন’ গ্রন্থ নিয়ে পাঠচক্রের আয়োজন করেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গুগল মিটে এটি অনুষ্ঠিত হয়। পাঠচক্রে বন্ধুরা সোনালী কাবিন থেকে কবিতা পাঠের পাশাপাশি আলোচনা করেন কবির সামগ্রিক জীবন নিয়ে। আল মাহমুদের বিখ্যাত একুশের কবিতা ‘ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ/ দুপুর বেলার অক্ত…’ এবং ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ নিয়ে শৈশব-কৈশোরের আল মাহমুদকে স্মরণ করেন বন্ধুরা।

পাঠচক্রে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি আবু রায়হান, সহসভাপতি ঊর্মি বণিক, ইসরাত জাহান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উম্মে মেহেরুনসহ কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যান্য সদস্য এবং বন্ধুরা। সঞ্চালক পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক নকীবুল হকের কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে শেষ হয় এই পাঠচক্র।

পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, নোবিপ্রবি বন্ধুসভা