বাংলা শুধু ভাষা নয়, এটা আমাদের মা। বাংলা ভাষা শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন। এই ভাষার জন্য রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিকসহ আরও অনেক বীর সন্তান জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন। যাঁদের রক্তে রাঙানো একুশ, তাঁরা যে অম্লান। ধন্য আমার মাতৃভাষা, ধন্য তাঁদের প্রাণ।
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বিশেষ এই দিনে ভোরবেলা খালি পায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার পক্ষ থেকে ভাষাশহীদদের স্মরণে ফুল দিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। পরে বন্ধুদের নিয়ে চা–চক্র ও ভাষা আন্দোলনভিত্তিক উপন্যাস জহির রায়হানের ‘আরেক ফাল্গুন’ বইয়ের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সাংগঠনিক সম্পাদক রাতুল শাহিনের বক্তব্যে উঠে আসে ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারির দিনগুলোর কথা এবং ১৯৫৫ সালে একুশে ফেব্রুয়ারি পালনের তিক্ত অভিজ্ঞতা। ছাত্র–জনতার মধ্যে তখনো চাপা উত্তেজনা, শহীদদের লাশের গন্ধ তখনো আকাশে–বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি বাংলা, মূল্যায়িত হয়নি শহীদদের আত্মত্যাগ। উল্টো সরকারের দমন–পীড়ন বেড়ে যায়। স্বৈরাচারী শাসকের পদতলে পিষ্ট হয় শহীদ মিনার।
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক সাদ আহমেদ বলেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারির আগের রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা অতন্দ্র প্রহরীর মতো সারা রাত জেগে রইল। পরদিন তারা আন্দোলনের জন্য রাজপথে জামায়েত হতে থাকে। ক্রমশ উত্তেজনা বাড়ে। একপর্যায়ে পুলিশ গুলি করে।’ সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, ‘ভাষাশহীদদের জীবনের বিনিময়ে আজ আমরা মায়ের ভাষায় স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি। ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালির মুক্তির প্রথম আন্দোলন। এর মধ্য দিয়েই স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়।’
উপদেষ্টা সেলিম রেজা বলেন, ‘আমাদের জীবনে সামাজিক সংগঠনের ভূমিকা অনেক। এই সংগঠনগুলো শেখায়, কীভাবে সবার মতকে শ্রদ্ধা করতে হয়; দায়িত্ব পালন করতে ও নিজেকে বিকশিত করতে একসঙ্গে কাজ করতে হয়। ভাষা আন্দোলনও এমন সংগঠনের কারণে জোরালো হয়েছিল।’
প্রচার সম্পাদক, বশেমুরবিপ্রবি বন্ধুসভা