যান্ত্রিক জীবন ছেড়ে প্রকৃতির সান্নিধ্যে একটি দিন

হাঁড়ি ছোঁয়া খেলা
ছবি: বন্ধুসভা

একঘেয়ে ব্যস্ত জীবন থেকে একটু ছুটি সবারই প্রত্যাশিত। শহরের প্রাত্যহিক জীবন আর দূষিত বাতাস থেকে বেরিয়ে নির্মল বাতাসে মন খুলে একটু শ্বাস নিতে পারলে যেন স্বস্তির অন্ত নেই। সেই লক্ষ্যেই দিনাজপুরের ঐতিহাসিক রামসাগর জাতীয় উদ্যানে মিলিত হন দিনাজপুর বন্ধুসভার বন্ধুরা।

শহর থেকে আট কিলোমিটার দক্ষিণে দিনাজপুর জেলার তাজপুর গ্রামে অবস্থান রামসাগর জাতীয় উদ্যানের। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম দিঘি রামসাগর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত, মানুষের খনন করা দেশের সবচেয়ে বড় দিঘি এটি। আয়তন ৪,৩৭,৪৯২ বর্গমিটার, দৈর্ঘ্য ১,০৩১ মিটার ও প্রস্থ ৩৬৪ মিটার। গভীরতা গড়ে প্রায় ১০ মিটার। পাড়ের উচ্চতা ১৩.৫ মিটার। পলাশীর যুদ্ধের সময় থেকে দিঘিটি দিনাজপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে চলেছে।

রামসাগর জাতীয় উদ্যানে বন্ধুদের একাংশ
ছবি: বন্ধুসভা

১০ মার্চ রামসাগর জাতীয় উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয় দিনাজপুর বন্ধুসভার আয়োজনে ‘বার্ষিক চড়ুইভাতি ২০২৩’। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার বন্ধুরাও এতে অংশগ্রহণ করেন। দুই বন্ধুসভার বন্ধুদের যুগলবন্দীতে দিনভর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি উপভোগ্য হয়ে ওঠে।

সকালে রামসাগরে পৌঁছে শুরু হয় প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা। চারদিকের সবুজে ঘেরা বেষ্টনীর মনোমুগ্ধকর রূপ মোহিত করে সবাইকে। নাশতার পর শুরু হয় ঘোরাঘুরি। এক প্রান্তে দেখা মেলে বেশ কিছু হরিণ, বানর ও বড় বড় অজগরের। অন্যদিকে চলে রান্নার তোড়জোড়। কেউ রান্নার কাজে সহযোগিতা করছেন, আবার কেউ ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত। এরপরই ক্রীড়া সম্পাদকের দিকনির্দেশনায় শুরু হয় বিভিন্ন রকম খেলা। জলডাঙ্গা, হাঁড়ি ছোঁয়া, এক পায়ে দৌড় ইত্যাদি খেলার মাধ্যমে চমৎকারভাবে কেটে যায় সময়। দুপুরের খাওয়ার পর নাচ, গান, গল্প, আড্ডা ও সবশেষে অনুষ্ঠিত হয় পুরস্কার বিতরণী পর্ব।

এ সময় প্রথম আলোর প্রতিনিধি শৈশব রাজু বলেন, ‘দিনাজপুর বন্ধুসভার চমৎকার এ আয়োজন বেশ উপভোগ করলাম, খেলাধুলার সময় ফিরে গিয়েছিলাম সেই শৈশবে, ধন্যবাদ জানাই প্রিয় বন্ধুসভাকে।’ হাবিপ্রবি বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, ‘দিনাজপুর বন্ধুসভাকে কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের এমন চমৎকার আয়োজনে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। দুই বন্ধুসভার বন্ধুরা মিলে দারুণ উপভোগ করলাম দিনটি।’ হাবিপ্রবি বন্ধুসভার সভাপতি হৃদয় বলেন, ‘ভবিষ্যতে দুই বন্ধুসভা মিলে বেশ কিছু আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করি, আমরা সারা দেশের কাছে দিনাজপুরকে তুলে ধরতে পারব।’

সাধারণ সম্পাদক, দিনাজপুর বন্ধুসভা