সমাজের পিছিয়ে পড়া শিশুদের নিয়ে আনন্দ উৎসব করেছে হাবিপ্রবি বন্ধুসভা। ২৫ অক্টোবর দিনব্যাপী এই আয়োজনে ছিল দৌড় প্রতিযোগিতা, মোরগ লড়াই, চকলেট দৌড়, বিস্কুট দৌড়সহ বিভিন্ন ধরনের খেলা ও শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ।
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই উৎসবে অংশ নেয় ২৫ শিশু-কিশোর। প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘একটি ভালো কাজ’-এর অংশ হিসেবে এই কর্মসূচি করা হয়।
‘শিশুর হাসির চেয়ে সুন্দর কিছু হতে পারে না’ স্লোগানে সকালে শুরু হয় খেলাধুলা পর্ব। শিশুরা হাসিমুখে অংশ নেয় প্রতিটি খেলায়। কেউ দৌড়ে প্রথম হতে চায়, কেউ আবার চকলেটের পেছনে দৌড়ে মেতে ওঠে আনন্দে। মোরগ লড়াইয়ে বন্ধুদের উৎসাহ আর দর্শকদের হাসিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো মাঠ।
দিনের শেষে আনন্দে ভরপুর ছিল তাদের মুখ। কেউ খুশিতে লাফিয়ে বলছে, ‘আজ অনেক খেললাম, আগে কখনো এমন দিন পাইনি।’ আরেকটি শিশু বলল, ‘আমাকে আজকে খাতা-কলম দিয়েছে, আমি এখন ভালো করে পড়ব।’ একটি মেয়েশিশু বলে, ‘চকলেট দৌড়ে আমি জিতেছি! আমি খুব খুশি।’
শিশুদের এই হাসি আর আনন্দই যেন আয়োজনটির আসল সার্থকতা। হাবিপ্রবি বন্ধুসভার সভাপতি নাসিম আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এই আয়োজন শুধু আনন্দের জন্য নয়, বরং তাদের মনে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ জাগানোর একটি প্রচেষ্টা। সমাজের এই শিশুদেরও আমাদের মতোই স্বপ্ন আছে—আমরা শুধু তাদের সেই স্বপ্ন দেখার সুযোগটা করে দিতে চাই।’
খেলা শেষে প্রত্যেক শিশুকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয় তিনটি খাতা, তিনটি কলম, দুটি পেনসাল, দুটি রাবার ও দুটি পেনসিল শার্পনার। এ ছাড়া সবাইকে দেওয়া হয় চকলেট ও নাশতা, যা তাদের মুখে এনে দেয় তৃপ্তির হাসি।
সাধারণ সম্পাদক রুশাদ বিন আনোয়ার বলেন, ‘বন্ধুসভার এই ধারাবাহিক মানবিক কার্যক্রম সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তরুণদের এমন উদ্যোগ আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার গর্ব।’
বইমেলা সম্পাদক আশিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘এমন আয়োজনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ তাদের মানবিকতা ও সহমর্মিতা বাড়ায়। বন্ধুসভার এই প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে অনুপ্রেরণাদায়ক।’
দিনভর চলা এই আয়োজন ছিল উৎসবের মতো। শিশুরা খেলাধুলা শেষে একসঙ্গে বসে চকলেট আর নাশতা খেয়েছে, কেউ হাসছে, কেউ পুরস্কার নিয়ে আনন্দে লাফাচ্ছে। বন্ধুসভার সদস্যরাও শিশুদের সঙ্গে গল্প করেছে, খেলেছে, ছবি তুলেছে।
বন্ধু, হাবিপ্রবি বন্ধুসভা