বর্তমান প্রেক্ষাপটেও প্রাসঙ্গিক আহমদ ছফার ‘গাভী বিত্তান্ত’

পাঠচক্র শেষে গান পরিবেশনা করেন বন্ধু অরূপা রহমান ও অরুণিমা পালছবি: বন্ধুসভা

জাহাঙ্গীরনগরে শীত যেন একটু আগেভাগেই জাঁকিয়ে বসেছে। নীড়ের পাখিরা সন্ধ্যা নামার আগে নীড়ে ফিরতে ব্যস্ত। ২৭ নভেম্বরের এমনই শীতের বিকেলে পাঠের আসর করেছে জাবি বন্ধুসভা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসির ১০ নম্বর কক্ষে অনুষ্ঠিত পাঠের আসরের বিষয় ছিল আহমদ ছফার কালজয়ী উপন্যাস ‘গাভী বিত্তান্ত’।

উপন্যাসের পটভূমি, চরিত্র এবং বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করেন বন্ধু অরিত্র গুহ। তাঁর আলোচনায় উঠে আসে, ‘গাভী বিত্তান্ত’ বইয়ে আহমদ ছফা অত্যন্ত ব্যঙ্গাত্মকভাবে তুলে ধরেছেন তৎকালীন বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দুর্নীতি, রাজনীতি এবং বুদ্ধিজীবীদের নৈতিক অবক্ষয়। উপন্যাসে দেখা যায়, কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও জ্ঞানচর্চার মতো মৌলিক বিষয়গুলো উপেক্ষিত হয়ে পড়ে। প্রশাসনিক দুর্নীতি, শিক্ষকদের জ্ঞানচর্চার প্রতি অনাগ্রহ এবং ক্যাম্পাসে রাজনীতির প্রভাব বিষয়গুলো লেখক গভীর তীক্ষ্ণতায় তুলে ধরেছেন।

পাঠচক্রে সভাপতি সুমাইয়া জামান বিশেষভাবে আলোকপাত করেন উপন্যাসের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘“গাভী বিত্তান্ত” শুধু ছফার সময়ের বাস্তবতা নয়, আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপটেও এটি ভীষণ প্রাসঙ্গিক। লেখক আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার অসঙ্গতি ও রাজনৈতিক প্রভাবের যে চিত্র তুলে ধরেছেন, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সতর্কসংকেত। এই উপন্যাস শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং প্রশাসনের ভূমিকাকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে। এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব এবং সচেতনতা জাগ্রত করে।’

শেষে বন্ধু অরূপা রহমান ও অরুণিমা পালের কণ্ঠে দুটি সুরেলা গান দিয়ে পাঠচক্রের সমাপ্তি ঘটে। সবশেষে ছিল মাসিক সাধারণ সভা। যেখানে বন্ধুরা পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন।

পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক অনুপ সরকার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মৃদুল পাল, দপ্তর সম্পাদক ইমাম আল হাসান, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক সাদিক বাপ্পি, প্রচার সম্পাদক রেজনান চৌধুরী, বন্ধু মারিয়া মুরাদ, আনোয়ার রুদ্র, তাসনিয়া ধ্রুতিসহ আরও অনেকে।

বন্ধু, জাবি বন্ধুসভা