‘চট্টগ্রামের প্রাচীন ইতিহাস’ প্রবন্ধ গ্রন্থ নিয়ে পাঠচক্র

মেরিটাইম মিউজিয়ামের মাঠ প্রাঙ্গণে চট্টগ্রাম বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসরছবি: বন্ধুসভা

উপমহাদেশের প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম অন্যতম। এ শহরের অনেক প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে, যা অনেকের কাছে এখনো অজানা। লেখক ও গবেষক সুনীতিভূষণ কানুনগো তাঁর ‘চট্টগ্রামের প্রাচীন ইতিহাস’ বইতে চট্টগ্রামের নামকরণ, ঐতিহ্য ও জনপদের বহুমুখী দিককে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন। প্রবন্ধটিতে প্রাচীন চট্টগ্রামের রাজনৈতিক প্রভাব, বাণিজ্যিক যোগাযোগ ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির বিশদ বিশ্লেষণ পাওয়া যায়।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর নগরীর মেরিটাইম মিউজিয়ামের মাঠ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম বন্ধুসভার হিরণ্ময় কথকতা সিরিজ পাঠচক্রের ১১তম আসর। এবারের আলোচ্য বই ছিল লেখক ও গবেষক সুনীতিভূষণ কানুনগোর গবেষণামূলক প্রবন্ধ ‘চট্টগ্রামের প্রাচীন ইতিহাস’। শরতের বিকেলে বন্ধুদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে আসর।

বই আলোচনায় সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রামের বাসিন্দা হলেও এই শহরের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের সবার জানা খুব প্রয়োজন। শুধু শহর বললে ভুল হবে, পুরো চট্টগ্রামকে জানতে হবে। লেখক ও গবেষক সুনীতিভূষণ কানুনগো বেশ সুন্দরভাবে বইটিতে চট্টগ্রামের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে তুলে ধরেছেন। যেমন চট্টগ্রামের আদি নাম ছিল “চাটিগাঁ”, যা একটা পর্যায়ে হয়ে যায় “চাটগাঁ”। অতঃপর কালক্রমে এর নাম হয় “চট্টগ্রাম”।’

লেখক তাঁর এ বইতে বলেছেন, এটি প্রাচীনকাল থেকেই একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকূলীয় জনপদ। মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন সাম্রাজ্যের অধীন চট্টগ্রামের অবস্থান ছিল। পাশাপাশি আরাকান, ত্রিপুরা ও আসামের সঙ্গে এ অঞ্চলের বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। প্রাচীন চট্টগ্রাম ছিল পূর্ব ও পশ্চিমের যোগাযোগের সেতুবন্ধন। আরব, পারস্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বণিকেরা এ বন্দরে বাণিজ্য করতেন। হাতির দাঁত, মসলা, মসলিন ও কাঠ ছিল এর প্রধান রপ্তানিপণ্য। এ ছাড়া ভৌগোলিক অবস্থান ও বন্দরকেন্দ্রিক বাণিজ্যের কারণে চট্টগ্রামে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বসবাস গড়ে ওঠে। হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলিম প্রভাবের মিলিত ধারায় এ অঞ্চলের সংস্কৃতি বহুমাত্রিক রূপ পায়। ‘চট্টগ্রামের প্রাচীন ইতিহাস’ বইটি কেবল একটি অঞ্চলের অতীত চিত্রই নয়, বরং বাংলাদেশের সামগ্রিক ইতিহাসচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে।

পাঠচক্র সঞ্চালনা করেন পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক কামরান চৌধুরী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান খান, প্রচার সম্পাদক সাকিব জিশান, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বহ্নিশিখা পর্ণা, বন্ধু তোফাজ্জল হোসেন, আফিফ ইব্রাহিম, অনামিকা দাশ, দেবশ্রী নন্দী, নাঈমুল ইসলাম, রুবাইদ আলম, মাসুম বিল্লাহসহ অন্য বন্ধুরা।

পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, চট্টগ্রাম বন্ধুসভা