গান আমাদের মনের খোরাক জোগায়। মন খারাপের সঙ্গী গান, মন ভালো করারও সঙ্গী গান। এককথায়, আমাদের জীবনের সঙ্গে গান জড়িয়ে আছে। দিনের একটা সময়ে গুন গুন করে গেয়ে উঠি প্রিয় গানের সুর। বর্ষার প্রকৃতি তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছে কয়েক দিন ধরে। সারা দিন বৃষ্টি, মেঘের গর্জন। টিনের চালে ঝুম বৃষ্টি চমৎকার সংগীত তৈরি করে।
দিনটি ১৯ জুলাই। ঠিক রাত ৮টা। বন্ধু মোশারফ রাব্বির কণ্ঠ থেকে ভেসে আসে, ‘সোনারও পালঙ্কের ঘরে/ লিখে রেখে ছিলেম দ্বারে, যাও পাখি বল তারে/ সে যেন ভুলে না মোরে।’ ভৈরব বন্ধুসভার ‘গানে গানে ঈদ আড্ডা’ শিরোনামে সংগীতানুষ্ঠানের সূচনা হয় গানটি পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।
বন্ধুরা সারা বছর দেশের একেক প্রান্তে থাকেন, একসঙ্গে সবাই মিলে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতেই এ আয়োজন। সাংস্কৃতিক সম্পাদক তাবাসসুম কায়সার শোনান ‘মধুমালতী ডাকে আয়/ ফুল ও ফাগুনের এ খেলায়’ কালজয়ী গানটি। গানের পাশাপাশি চলে আলোচনা পর্ব। গান নিয়ে বন্ধুদের কাছে প্রতিক্রিয়া জানেন সাধারণ সম্পাদক মানিক আহমেদ ও অর্থ সম্পাদক নাফিস রহমান। দুজনই ছিলেন আয়োজনটির সঞ্চালক।
গান নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান উপদেষ্টা আলাল উদ্দিন, বন্ধু নাহিদ হোসাইন ও প্রচার সম্পাদক রাসেল আহমেদ। উপদেষ্টা জনি আলম বলেন, ‘আমরা কলেজে পড়াকালীন গান নিয়ে নানা ধরনের আয়োজন দেখতাম। এখন কালের পরিবর্তনে সেগুলো আর দেখা যায় না। কয়েক বছর ধরে ভৈরব বন্ধুসভার গানের আয়োজনগুলো সংস্কৃতির এই পালে হাওয়া দিচ্ছে। আশা করছি গানের সোনালি দিন আবারও ফিরে আসবে।’
সাংস্কৃতিক সম্পাদক তাবাসসুম কায়সার ও মোশারফ রাব্বি দ্বৈত কণ্ঠে শোনান, ‘তুমি আমার কত চেনা, সে কি জানো না? এই জীবনের আশা তুমি, তুমি যে ঠিকানা’ গানটি। বন্ধু নাহিদ হোসাইন শোনান ‘ভালোবাসা দাও, ভালোবাসা নাও’ গানটি। মোশারফ রাব্বি আরও শোনান ‘তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা’, ‘তুমি এসেছিলে পরশু’, ‘মোর প্রিয়া হবে এসো রানি/ দেব খোঁপায় তারার ফুল’ গানগুলো। তাবাসসুম কায়সার শোনান, ‘যখন থামবে কোলাহল/ ঘুমে নিঝুম চারিদিক’, ‘আল্গা কর গো খোঁপার বাঁধন্, দিল ওহি মেরা ফ্যঁস্ গ্যয়ি’। এরপর বন্ধুরা সমবেত কণ্ঠে গেয়ে ওঠেন, ‘শ্রাবণের মেঘগুলি জড়ো হলো আকাশে/ অঝোরে নামবে বুঝি শ্রাবণে ঝরায়ে’। অন্যদের মধ্যে কণ্ঠ দেন বন্ধু প্রাপ্তি ঘোষ, ফাহিম আহমেদ, আনাস খান, জিহাস খান, সামির রহমান ও আদিব রহমান।
সভাপতি প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘বাংলা সংগীতের ইতিহাসে অসংখ্য কালজয়ী গান আছে। ভাইরাল আর রিমিক্সের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলা গানের সোনালি অতীত। গানের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা সেই কালজয়ী গানগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই।’
পুরো আয়োজনটি ভৈরব বন্ধুসভা ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ সম্প্রচারিত হয়। সেখানে গান নিয়ে মতামত জানান শ্রোতারা, একই সঙ্গে প্রিয় গানগুলো শোনানোর অনুরোধও জানান।
প্রচার সম্পাদক, ভৈরব বন্ধুসভা