‘শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সুন্দর দেশ বিনির্মাণ সম্ভব’

ফেনী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনাছবি: বন্ধুসভা

রৌদ্রোজ্জ্বল সকালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠে ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বর। ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয় কৃতী শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিখো-প্রথম আলোর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সকাল আটটা থেকে শিল্পকলা একাডেমি মাঠে উপস্থিত হতে থাকে কৃতী শিক্ষার্থীরা। অনেক অভিভাবকও আসেন। শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানস্থলে এসে নির্দিষ্ট বুথের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেস্ট ও স্ন্যাকসের ব্যাগ সংগ্রহ করে। দীর্ঘদিন পর সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হওয়ায় সেলফি তুলতে ও আড্ডায় ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় তাদের।

শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানস্থলে এসে নির্দিষ্ট বুথের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেস্ট ও স্ন্যাকসের ব্যাগ সংগ্রহ করে
ছবি: বন্ধুসভা

সকাল ১০টায় শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের মূল পর্ব শুরু হয়। প্রথমেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন ফেনী বন্ধুসভার বন্ধু ও শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা। পরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বন্ধুসভার সভাপতি বিজয় নাথ ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জান্নাত আক্তারের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ফেনী প্রতিনিধি আবু তাহের। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, ফেনী সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আইউব, জিয়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন্নাহার, ফেনী সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. মোশারফ হোসেন, শাহীন একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ একরামুল হক ভূইয়া, ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস আরা বেগম, স্থানীয় দৈনিক ফেনীর সময় পত্রিকার সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন ও বন্ধুসভার উপদেষ্টা আবদুল হালিম।

সাংস্কৃতিক পর্বে ফেনী বন্ধুসভার বন্ধুদের পরিবেশনা
ছবি: বন্ধুসভা

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, ‘জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে সবাইকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আজকের একটি ক্রেস্ট তোমাদের জীবনের একটি বড় প্রাপ্তি। এই সম্মাননার কথা মনে রাখতে হবে। সম্প্রতি আমরা শিক্ষার্থীদের অবদান ও মহিমা দেখেছি। মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছে বলেই দেশের মোড় ঘুরে গেছে। ছাত্র-জনতার সংগ্রামে আমরা যে কৃতিত্ব অর্জন করেছি, তা সারা জীবন মনে রাখতে হবে। শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সুন্দর দেশ বিনির্মাণ সম্ভব। এখানে উপস্থিত সবাই মেধাবী। দেশ তথা বিশ্বের জন্য তোমাদের দরকার। কিন্তু তোমাদের শত্রুও আছে। শত্রুগুলো কী? প্রথম শত্রু হলো তোমাদের বয়স। এটাকে জয় করতে হবে। দুই নম্বর হলো অপ্রয়োজনীয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো। এসবে সময় নষ্ট করা যাবে না, তোমরা রাত জাগবে না। পড়ালেখা রাতে করবে। তৃতীয়ত হলো, পুরো বিশ্বই এখন বিশ্বগ্রাম। তাই তোমাদের প্রতিযোগিতা বেশি, তোমরা সফল হলে বাংলাদেশ সফল হবে।’

অনুষ্ঠান শেষে ফেনী বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

বক্তারা আরও বলেন, এসএসসির পর এইচএসসিতে ভালো ফলাফল করতে পারলে তোমাদেরও জীবনের মোড় ঘুরে যাবে। শুধু পাঠ্যবই পড়ে নয়, পত্রিকাসহ বিভিন্ন মনীষীর ও ভালো ভালো বই পড়ে বিশ্বকে জানতে হবে, নিজেকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবনের গতি পরিবর্তন করতে হবে। পড়ালেখার পাশাপাশি সবাইকে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও মনোনিবেশ করতে হবে। সাটিফিকেট অর্জনের সঙ্গে নিজের জ্ঞানকেও পূর্ণতা দিতে হবে।

সাংস্কৃতিক পর্বে ফেনী বন্ধুসভা ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরাসহ শিক্ষার্থীরা গান, কবিতা আবৃত্তি ও অনুভূতি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে জেলার ৮১২ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করে।