বাংলা সাহিত্যের অন্যতম দিকপাল শওকত ওসমানের কালজয়ী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘দুই সৈনিক’ নিয়ে ভার্চ্যুয়াল পাঠচক্রের আসর করেছে নোয়াখালী বন্ধুসভা। ২১ নভেম্বর রাত সাড়ে ৯টায় সাংগঠনিক সম্পাদক সানি তামজীদের সঞ্চালনায় গুগল মিট অ্যাপে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
‘দুই সৈনিক’ উপন্যাসটি একই সঙ্গে ১৯৭১ সালের বিভীষিকাময় দিকগুলো তুলে ধরে, আবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকেও চিত্রায়িত করে। উপন্যাসটির নামকরণ করা হয়েছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দুই অফিসারকে কেন্দ্র করে, যারা মূলত প্রতীকী অর্থে ‘দুই সৈনিক’।
মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনায় পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক শাহিদা রেশমি বলেন, লেখক মখদুম মৃধার মতো চরম পশ্চিম পাকিস্তানপন্থী ও সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন চরিত্রের মাধ্যমে দেশদ্রোহী ও সুবিধাবাদী শ্রেণির চিত্রায়ণ করেছেন। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সময় হানাদার বাহিনীর পাশবিক ক্রিয়াকলাপ, ধর্ষণ, অত্যাচার ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেছেন।
সভাপতি উম্মে ফারহিন বলেন, মখদুম মৃধার মেয়ে সাহেলী ও চামেলীকে পাকিস্তানি সেনারা তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মৃধার করুণ পরিণতি ও উপন্যাসের মর্মান্তিক সমাপ্তি পাঠকের হৃদয়কে নাড়িয়ে দেওয়ার মতো। মখদুম মৃধার মতো রাজাকারদের এভাবেই পতন ঘটে।
সাধারণ সম্পাদক মো. শিমুল বলেন, উপন্যাসটি সমসাময়িক বাংলাদেশের রাজনীতি, সামাজিক পরিবেশ, সাম্প্রদায়িকতা ও বাঙালির অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যের প্রসঙ্গ। লেখক হাস্যরসাত্মক হিন্দি ও বাংলা ভাষার সংমিশ্রণে পশ্চিম পাকিস্তানপন্থীদের অবস্থা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক সানি তামজীদ উপন্যাসের মূল ভাবনা তুলে ধরে বলেন, উপন্যাসটিতে পরিবারের অভ্যন্তরে আদর্শগত সংঘাতের বিষয়টি প্রকট। মখদুম মৃধা নিজে দেশদ্রোহী হলেও তার স্ত্রী, মা ও দুই মেয়ে (সাহেলী ও চামেলী) কিন্তু গোপনে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ছিল। এটি সমাজের বিভিন্ন স্তরে বিদ্যমান আদর্শিক বিভেদকে তুলে ধরে।
পাঠচক্রে আরও আলোচনা করেন সহসভাপতি জেরীন ফাহমিদা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ধ্রুব ভূঁইয়া, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আরাফাত শিহাব, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সম্পাদক নজরুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক তাসমিয়া ইয়াসমিন, বন্ধু শান্ত চন্দ্র দে, সামিনুর রহমান, উমামাসহ আরেও অনেকে।
দপ্তর সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা