‘পথচলার শুরু থেকেই প্রথম আলো প্রতিটি সরকারের বিরাগভাজন ছিল। আমরা চাই আগামীতেও এমনই থাকুক প্রথম আলো। শুরু থেকেই তারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে কখনো আপস করেনি। এ জন্য প্রথম আলোর প্রতি পাঠকদের ভালোবাসা ও বিশ্বাস প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। শুধু সংবাদ পরিবেশনই নয়, সমাজ সংস্কারেও অনন্য ভূমিকা রাখছে প্রথম আলো।’
৭ নভেম্বর বেলা সাড়ে তিনটায় নগরের ধর্মসাগর পাড়ে কুমিল্লা নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্রের মুক্তমঞ্চে প্রথম আলোর ২৬তম বর্ষপূর্তি উদ্যাপন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন অতিথিরা। পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের কঠিন দিনগুলোতে সাহস, সততা ও বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশের জন্য প্রথম আলোকে ধন্যবাদ জানান তাঁরা।
কুমিল্লা বন্ধুসভার আয়োজনে অনুষ্ঠানের শুরুতে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতির কাছে সত্য তুলে ধরার জন্য পথচলার শুরু থেকে সবচেয়ে বড় মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে প্রথম আলো। প্রথম দিন থেকে তারা ক্ষমতাসীনদের চোখ রাঙানিকে ভয় পায়নি। শুধু বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনই নয়, সমাজ বিনির্মাণেও বড় ভূমিকা রাখছে প্রথম আলো। অ্যাসিড–সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অবস্থান থেকে শুরু বন্যার্তদের পাশে—সব ক্ষেত্রেই প্রথম আলোর ভূমিকা অনন্য। আশা করছি অতীতের মতোই আগামীতেও এগিয়ে যাবে তারা। কারণ, প্রথম আলোর বড় শক্তি তাদের পাঠক।’
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, ‘সত্য চিরকাল সত্য। তবে সত্য প্রকাশ করা কঠিন। শুরু থেকেই সেই কঠিন কাজটি করে গেছে প্রথম আলো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রথম আলোর ভূমিকা ছিল ব্যাপক। অনেক গণমাধ্যম আন্দোলনের সময় ভয়ে কথা বলেনি, কিন্তু পেশাদারত্ব বজায় রেখে সত্য প্রকাশ করে গেছে প্রথম আলো। বন্ধুসভার মানবিক কাজগুলো সমাজকে আলোকিত করছে। তাদের জন্য শুভকামনা জানাই।’
ইতিহাস গবেষক ও লেখক আহসানুল কবীর বলেন, ‘শুরুর দিন থেকেই আমি প্রথম আলোর পাঠক। সব সময় দেখেছি যেকোনো সরকারের আমলেই বিরাগভাজন ছিল প্রথম আলো। এখনো সেই ধারা অব্যাহত আছে। আমরা চাই ভবিষ্যতেও এমনই থাকুক প্রথম আলো।’
ব্রাহ্মণপাড়ার মাধবপুর আলহাজ্ব মুহাম্মদ আবু জাহের ফাউন্ডেশন কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘২৬ বছর ধরে সত্য প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ জানাই প্রথম আলোকে। আমাকে যদি বলা হয় সব পত্রিকার মধ্যে একটি পত্রিকাকে পুরস্কার দিতে হবে—তাহলে চোখ বন্ধ করে সেই পুরস্কার প্রথম আলোকেই দেব। প্রথম আলো কখনো পাঠকের বিশ্বাস ভঙ্গ করেনি। পৃথিবীতে অর্ধেক সত্য বলতে কিছু নেই, পুরো সত্য প্রকাশ করে পাঠকের হৃদয়ে আছে প্রথম আলো।’
কুমিল্লা নগরের এথনিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাকছুদুল আলম কিরণ বলেন, ‘শুরুর দিকে খেলার পাতার জন্য প্রথম আলো পড়তাম। এখনো প্রথম আলোর সঙ্গেই আছি। প্রথম আলোর এবারের স্লোগান “জেগেছে বাংলাদেশ”। এই স্লোগানকে ধারণ করে পত্রিকাটি এগিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করি।’
কুমিল্লা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবদুল হাফিজ বলেন, ‘অতীতের মতোই আগামীতেও দেশকে ভালোবেসে ন্যায় ও সততার সঙ্গে সংবাদ প্রকাশ করবে প্রথম আলো—এই প্রত্যাশা আমাদের সবার। বস্তুনিষ্ঠতা ও পেশাদারত্বের কারণে আগামীতে প্রথম আলোর প্রচার আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি।’
নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার বলেন, ‘শুরু থেকেই পাঠক হিসেবে দেখছি প্রথম আলো সত্য প্রকাশে অকুতোভয়। আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকুক এবং সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাক।’
কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন লিটন বলেন, ‘সমাজের অত্যাচার ও অবিচারের বিরুদ্ধে সব সময় ভূমিকা রেখেছে প্রথম আলো। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সত্য প্রকাশ করে দেশের জন্য বড় ভূমিকা রেখেছে তারা।’
নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আল আমিন বলেন, ‘সত্যে তথ্যে ২৬; এটা কোনো স্লোগান নয়—প্রথম আলোর ক্ষেত্রে এটাই বাস্তবতা। এ বছরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রথম আলোর স্লোগান “জেগেছে বাংলাদেশ”। এ জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
এর আগে শুরুতে প্রথম আলো সম্পাদকের বর্ষপূর্তির শুভেচ্ছা বাণী পাঠ করেন প্রথম আলো কুমিল্লার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা জুয়েল। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কুমিল্লা বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কর্মকার। আরও বক্তব্য দেন বন্ধুসভার উপদেষ্টা দিলনাশি মোহসেন, রোকেয়া বেগম শেফালী, মাহমুদা আক্তার, আইরিন মুক্তা অধিকারী ও কুমিল্লা বন্ধুসভার বন্ধু চন্দন দাসসহ বিশিষ্টজনরা।
অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেন বন্ধুসভার বন্ধুরা। অংশ নেন বন্ধু রায়লা আক্তার ও রাইয়ান বিনতে জামাল।