বন্যা–পরবর্তী সময়ে যেমন আছে ফেনী বন্ধুসভার রোপণকৃত গাছ

রোপণ করা অধিকাংশ চারা গাছই নষ্ট হয়ে গেছে। আর যেগুলো ভালো আছে, সেগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা করছেন বন্ধুরাছবি: বন্ধুসভা

ফেনী বন্ধুসভার পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক নুর উদ্দিন ভূঁইয়া তাঁর বাড়ির পাশে একটি পুকুরপাড়ে গত জুলাইয়ে কিছু আমগাছের চারা রোপণ করেন। এর মধ্যেই আগস্টে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। ঘরবাড়িসহ সব ডুবে যায়। তবে বন্যায় চারা গাছগুলো নষ্ট হয়নি। নিয়মিত গাছগুলোর যত্ন নিচ্ছেন তিনি।

নুর উদ্দিন ভূঁইয়াসহ ফেনী বন্ধুসভার অন্য বন্ধুরাও এ বছর নিজেদের বাড়ির আশপাশসহ বিভিন্ন স্থানে বৃক্ষরোপণ করেছেন। ‘আমার মাটি আমার দায়, গাছ রোপণে বাঁচা যায়’ প্রতিপাদ্যে বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের আহ্বানে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেন তাঁরা।

এর মধ্যে ৪ জুলাই ফেনী গিরিশ-অক্ষয় একাডেমি চত্বরে নিজেদের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ করে ফেনী বন্ধুসভা। পরবর্তী সময়ে ব্র্যাক মাইক্রোফিন্যান্সের সহযোগিতায় গত ২১ আগস্ট সোনাগাজী মো. ছাবের সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে ৭০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৬০০টি গাছের চারা বিতরণ করা হয়। এসবের মধ্য থেকে কিছু চারা বন্ধুরা নিজেদের বাড়িতে নিয়েও রোপণ করেন।

কিন্তু আগস্টে হঠাৎ বন্যা শুরু হয়ে অনেক চারা নষ্ট হয়ে যায়। বন্যা–পরবর্তী সময়ে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, রোপণ করা অধিকাংশ চারা গাছই নষ্ট হয়ে গেছে। আর যেগুলো ভালো আছে, সেগুলোর নিয়মিত পরিচর্যা করছেন বন্ধুরা।

ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও বন্ধুসভার বন্ধু দিপংকর রায় বলেন, ‘ধলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনেকগুলো চারা গাছ রোপণ করা হয়েছিল। বেশির ভাগ চারা বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু এখনো ভালো আছে। প্রতিদিন চেষ্টা করি পরিচর্যা করার। আশা করছি, এগুলো অনেক বড় হবে।’

ফেনী বন্ধুসভার কার্যনির্বাহী সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বন্ধুসভার দেওয়া চারাগুলোর বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পানি যখন কম ছিল, আমি আমার বাবার নার্সারিতে চারা গাছ রেখে আসি।’

প্রচার সম্পাদক সাইফ উদ্দিন জানান, বন্যায় তাঁর রোপণ করা আমগাছের সব চারা নষ্ট হয়ে গেছে।

বাগেরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘প্রথম আলো বন্ধুসভা ২০২২ সালে আমাদের বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করে। এ বছর বন্ধুসভা আবার বিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ করার জন্য ২০ আগস্ট প্রায় ৩০০টি আমগাছের চারা নিয়ে আসে। ২২ আগস্ট এগুলো রোপণ করার কথা ছিল। কিন্তু বন্যার কারণে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রোপণ করা সম্ভব হয়নি।’

ফেনী বন্ধুসভার উপদেষ্টা আবদুল হালিম বলেন, ‘বন্ধুসভা প্রতিবছর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ করে থাকে। এ বছর আমরা জুলাইয়ে বৃক্ষরোপণ শুরু করি। ব্র্যাক মাইক্রোফিন্যান্সের পক্ষ থেকেও কিছু চারা দেওয়া হয়। আগস্টে বন্যার কারণে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, অনেক চারা নষ্ট হয়ে গেছে।’

সাধারণ সম্পাদক, ফেনী বন্ধুসভা