জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ছোটগল্প ‘ব্যথার দান’ নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে নোয়াখালী বন্ধুসভা। ১৬ আগস্ট বিকেলে জেলা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক শাহিদা রেশমির সঞ্চালনায় পরিচয় পর্বের পর শুরু হয় মূল আলোচনা। সঞ্চালক বলেন, ‘“ব্যথার দান” গল্পের নামের মধ্যেই লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন প্রত্যেক সফল ব্যক্তির সফলতার বা সব অর্জনের পেছনে অনেক বিরহ, ব্যথা ও কষ্ট লুকিয়ে থাকার কথা। বার্তা দিয়েছেন, ব্যথা থাকলেও জীবনকে উপলব্ধি করা যায়, সুন্দর আর অর্থবহ করে উপভোগ করা যায়। এ জন্যই কবি নজরুল গল্পের নাম দিয়েছেন “ব্যথার দান”।’
দুনিয়ায় যত রকম আনন্দ আছে, তার মধ্যে বিচ্ছেদের ব্যথাটাই সবচেয়ে বেশি আনন্দময়। বিরহ মানুষকে মহান করে, নিষ্পাপ করে। বিরহ প্রেম-ভালোবাসাকে পূর্ণতা দান করে। বিরহ জীবনের দুঃখকষ্ট ও বেদনাকে দশ দিক থেকে সুখে পরিপূর্ণ করে। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘ব্যথার দান’ ছোটগল্পে দারা ও বেদৌরার মাধ্যমে সেই বিরহব্যথা, প্রেম–ভালোবাসা ও মায়ের মমত্বকে খুবই সুন্দর আর সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নায়ক দারা ও নায়িকা বেদৌরাকে কেন্দ্র করে গল্পে মিলন ও বিরহ, প্রেম ও কামনা এবং সর্বোপরি সবকিছুর বিয়োগান্ত হিসেবে ব্যথার জয়গান করা হয়েছে।’
দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম একজন বিদ্রোহী কবি, প্রতিবাদী কবি সেটা জানতাম; কিন্তু “ব্যথার দান” ছোটগল্প পড়ে জানতে পারলাম তিনিও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো একজন সফল ছোট গল্পকারও। মা-ছেলের সম্পর্ক, দারা ও বেদৌরার সম্পর্কের বিচ্ছেদ এবং পরিণতি তিনি চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন।’
বন্ধু বুশরা করিম বলেন, ‘“ব্যথার দান” ছোটগল্পটি প্রথম ১৯২২ সালে প্রকাশিত হয় এবং এ নামেই ছয়টি ছোটগল্প নিয়ে তাঁর একটি গল্পগ্রন্থ রয়েছে। সবগুলোর মধ্যে আমাকে গল্পটি পাঠক হিসেবে খুবই মুগ্ধ করেছে।’
পাঠচক্র শেষে সাবেক সভাপতি আসিফ আহমেদ জিপিএ-৫ সংবর্ধনার পূর্বপ্রস্তুতি এবং স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে করণীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজকির হোসেন, প্রচার সম্পাদক মালিহা তাসনিম, দপ্তর সম্পাদক নয়ন চন্দ্র কুরী, বন্ধু ইমতিয়াজ দোলন, এ এস এম সায়েম, সেজান মাহমুদসহ অন্য বন্ধুরা।
সাংগঠনিক সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা