শিমুলে-পলাশে রাঙা বাংলার দিগন্ত। গাছে গাছে নবীন পাতার গুচ্ছ। প্রকৃতিতে যখন নবীনের উন্মেষের আনন্দ-উচ্ছ্বাস, তখনই এক মর্মমূলছেঁড়া বেদনার ঘটনা ঘটেছিল এ বাংলায়। মায়ের ভাষার অধিকার রক্ষার দাবিতে শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে অকুতোভয় বীর সন্তানেরা নেমে এসেছিলেন রাজপথে। বুকের তাজা রক্তে বসন্তের রাঙা ফুলের মতোই রাঙিয়ে দিয়েছিলেন ঢাকার রাজপথ। মাতৃভাষার দাবিতে আত্মদানের এক অভূতপূর্ব অধ্যায় সেদিন সংযোজিত হয়েছিল মানব ইতিহাসে। সেই অনন্য স্মৃতিধন্য দিন অমর একুশে ফেব্রুয়ারি। মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
২১ ফেব্রুয়ারি ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ ছাড়া ভাষাশহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করেন বন্ধুরা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার উপদেষ্টা সাদেকুল আরেফিন বলেন, ‘বর্তমান সময়ে বাংলা ভাষা বিকৃতি অহরহ ঘটছে। আর আমাদের মতো কিছু শিক্ষক, সাংবাদিক, কিছু চলচ্চিত্রকার, অভিনয়শিল্পী তথা শিক্ষিত সমাজ এটা করছে। আজকের দিনে আহ্বান থাকবে, আসুন, সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে ভাষার বিকৃতি রোধ করি।’
সভাপতি তুহিনূজ্জামান বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের বীজ রোপিত হয়। ভাষার জন্য জীবন দেওয়া পৃথিবীতে বিরল এক ঘটনা। সেটা শুধু বাঙালিরাই করেছে। কিন্তু আজ আমরা বাংলা ইংরেজির সংমিশ্রণ ঘটাচ্ছি। ভাষার বিকৃতি করছি। ভাষাশহীদেরা আজকের এই দিন যদি দেখতেন, আমরা বাংলা ভাষাকে সেভাবে লালন করছি না, তাহলে হয়তো তাঁরা মর্মাহত হতেন।’ এ সময় তিনি সবাইকে শুদ্ধ বাংলা ভাষা চর্চার আহ্বান জানান।
প্রচার সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা