বীর মুক্তিযোদ্ধা বংকু বিহারী রায়। নীলফামারীর এই সূর্যসন্তান ১৯৭১ সালে রণাঙ্গনে সরাসরি যুদ্ধ করেছেন। দেশব্যাপী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার শুরু হলে তিনি ভারতের আসাম রাজ্যের তেজপুর মিলিটারি ক্যাম্পে গিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এক মাসের প্রশিক্ষণ শেষে অক্টোবর মাসে ভারতের কোচবিহার জেলার দিনহাটা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৪ মার্চ দুপুরে নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজ অডিটরিয়ামে নীলফামারী বন্ধুসভার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনি’ অনুষ্ঠানে বংকু বিহারী রায় শুনিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের জানা-অজানা নানা গল্প। উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বন্ধুসভার বন্ধুসহ অন্তত ৬০ জন।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ১৯৭১ সালের রণাঙ্গনের লোমহর্ষক গল্প শোনেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা বংকু বিহারী রায় শোনান স্বল্প সময়ের প্রশিক্ষণ এবং তুলনামূলক সীমিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে কৌশলে খান সেনাদের পরাস্ত করার গল্প।
বংকু বিহারী রায় বলেন, ‘স্বল্পসংখ্যক অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে খান সেনাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলাম না আমরা। তখন কৌশলে চার ভাগে বিভক্ত হয়ে চতুর্মুখী আক্রমণ চালাই। এতে খান সেনারা মনে করে, আমরা চারদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলেছি। এ অবস্থায় তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।’
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ছিলেন নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুল আনোয়ার। তিনি বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের জীবন বাজি রেখে এ দেশকে স্বাধীন করেছেন। তাঁরা আমাদের সূর্যসন্তান। তাঁদের আমরা সর্বোচ্চ সম্মান করব।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহজাহান, সহকারী অধ্যাপক মো. আজিজুর রহমান, প্রথম আলো প্রতিনিধি মীর মাহমুদুল হাসান, নীলফামারী বন্ধুসভার সভাপতি রুবি আক্তার, সাধারণ সম্পাদক আরিফ ফয়সাল সিদ্দিক প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সহসভাপতি নিপুন রায়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক তামান্না ইসলাম, অর্থ সম্পাদক জুয়েল ইসলাম, বন্ধু পায়েল রায়সহ বন্ধুসভার অন্য বন্ধুরা।