সিলেটের ভোলাগঞ্জে সীমান্তবর্তী একটি নদীর নাম ধলাই। ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে আসা এই নদীর উৎসমুখে পাঁচ একর জায়গাজুড়ে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে সাদা সাদা পাথর। ওপারে উঁচু পাহাড়ে ঘেরা সবুজের মায়াজাল থেকে নেমে আসা ঝরনার অশান্ত শীতল পানির বয়ে চলা গন্তব্য তৃষ্ণার্ত ধলাইয়ের বুকে স্বচ্ছ নীল জল, সাদা পাথর আর পাহাড়ের সবুজ মিলেমিশে যেন একাকার।
২ ডিসেম্বর শহরের যান্ত্রিকতা ফেলে কুয়াশা ডাকা ভোরে এমসি কলেজের প্রবেশমুখ থেকে বন্ধুসভার বন্ধুরা যাত্রা শুরু করে ভোলাগঞ্জের উদ্দেশে। যাত্রাপথে পুরো রাস্তাই আমাদের সঙ্গী ছিল সবুজ চা–বাগান, নীল আকাশ আর দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ। গান, কবিতা, হইহুল্লোড় ও আনন্দ আড্ডায় বন্ধুরা পুরো পথ মাতিয়ে রাখেন।
দেড় ঘণ্টার ভ্রমণ শেষে আমরা পৌঁছে যাই ভোলাগঞ্জ। ফেরিঘাট থেকে নৌকা নিয়ে ছুটে চলি মূল জায়গায়। চারপাশে চোখ ধাঁধানো সব দৃশ্য দেখতে দেখতে চলে যাই কাঙ্ক্ষিত সাদা পাথরের রাজ্যে। পানির তীব্র স্রোতের মধ্যে গা ভিজিয়ে শীতল পরশ নেওয়া, পাথর কুড়ানো আর ছবি তোলা। ক্যাম্পাসের বাইরে এসে বন্ধুদের আনন্দ যেন বাঁধনহারা।
বেলা বাড়তে বাড়তে সূর্য তখন মধ্য আকাশে। পেটও জানান দিচ্ছে তার ক্ষিধে লেগেছে। তা ছাড়া আমাদের আরও একটি গন্তব্যে যেতে হবে। তাই ফিরতে হলো। ভোলাগঞ্জে দুপুরের খাবার খেয়ে যাত্রা শুরু করি মালনীছড়া চা–বাগানের উদ্দেশে। সেখানে বন্ধুদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, পিলো পাসিং ও বেলুন ফাটানোসহ মজার সব খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। কেউ কেউ স্মৃতিচারণাও করেন। দিনটি হয়ে ওঠে বন্ধুত্বের। সবশেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন উপদেষ্টামণ্ডলী।
ভ্রমণে আমাদের সঙ্গী ছিলেন এমসি কলেজ বন্ধুসভার উপদেষ্টা এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অঘ্রাতা সৌরভ, ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবদুল বাসিত, উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম, সাবেক সহসভাপতি জবরুল ইসলাম, বর্তমান সভাপতি তানভির মাহফুজ, সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া সুলতানা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিশিতা সিনহা, সাংগঠনিক সম্পাদক উত্তম দাস, অর্থ সম্পাদক ফারহানা আক্তার, পাঠচক্র সম্পাদক ইভা সিদ্দিকীসহ অন্য বন্ধুরা।
সহসভাপতি, এমসি কলেজ বন্ধুসভা