সমাজের মানুষের জীবনব্যবস্থার চিত্র মাহমুদুল হকের ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‘অনুর পাঠশালা’

নোয়াখালী বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসরছবি: বন্ধুসভা

পৃথিবীর রহস্য জানার মূল চাবিকাঠি হলো জ্ঞান। সেই জ্ঞান আমরা অর্জন করে থাকি বই থেকে। যে যত বেশি বই পড়বে, সে তত বেশি জানবে। এই জ্ঞান পাঠককে যুগের পাল্লায় বিজয়ীদের আসনে আসীন করে রাখবে। তাই বইকে পাঠকের শ্রেষ্ঠ বন্ধুও বলা যায়!

জ্ঞানার্জনের ধারাবাহিকতাকে পাঠকের মধ্যে অব্যাহত রাখতে ২৩ এপ্রিল বিশ্ব বই দিবস উপলক্ষে পাঠচক্রের আসর করেছে নোয়াখালী বন্ধুসভা। বিকেলে জেলা শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এটি অনুষ্ঠিত হয়। নির্ধারিত বই ছিল মাহমুদুল হক রচিত প্রথম কিশোর উপন্যাস ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‘অনুর পাঠশালা’। সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক সানি তামজীদ।

আলো–আঁধারে জড়িয়ে থাকা একটা পরিবার, কিছু কিশোর আর এক অন্ত্যজ পল্লি থেকে স্বপ্ন কুড়িয়ে পাওয়া মুখরা এক কিশোরের গল্প নিয়ে মাহমুদুল হকের উপন্যাস ‘অনুর পাঠশালা’। অনু উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র। কোনো এক উচ্চবিত্ত পরিবারে মা–বাবার চরম অবহেলায় নিঃসঙ্গ সময়কে কাঁধে নিয়ে একাকিত্বের মধ্যে বেড়ে ওঠা অনুকে নিয়েই গল্প এগিয়ে যায়।

উপন্যাসটি পড়ে কতখানি অনুধাবন করতে পেরেছেন বন্ধুরা? সঞ্চালকের এমন প্রশ্নে পরিবেশ ও সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক শাহিদা ইসলাম বলেন, মাহমুদুল হক কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘অনু’র মাধ্যমে কিশোর বয়সে পৃথিবীর বিশাল–বিস্তৃত পাঠশালার বিভিন্ন বিষয় খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। মানুষের আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদার বিষয়টিও উঠে এসেছে।

কার্যকরী সদস্য নয়ন চন্দ্র কুরি বলেন, ‘১১ অধ্যায়ের স্বল্পদৈর্ঘ্যের উপন্যাসটিতে লেখকের শব্দচয়ন, বাক্যশৈলী পাঠক হিসেবে আমাকে মুগ্ধ করেছে। একই সঙ্গে শ্রেণিভেদে সমাজের বিভিন্ন মানুষের জীবনব্যবস্থাও লেখক তুলে ধরেছেন।

পরে উপন্যাসটির বিভিন্ন অংশ পড়ে শোনান বন্ধুরা। বই পড়া শেষে সভাপতি আসিফ আহমেদ বলেন, ‘মাহমুদুল হকের আরেকটি জনপ্রিয় উপন্যাস “কালো বরফ”। “অনুর পাঠশালা” ১৯৬৫ সালে রচিত তাঁর প্রথম উপন্যাস। এই উপন্যাসে তিনি সমাজব্যবস্থার উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির জীবনাচরণ এবং অনুর মাধ্যমে বর্তমান সমাজের অনেক কিশোরের মনের অবস্থা খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। পাঠক হিসেবে ভেবেছিলাম যে লেখক শেষের দিকে অনুর বাবাকে দিয়ে উপন্যাস শেষ করবেন; কিন্তু পড়তে পড়তে আবিষ্কার করলাম যে ঘটনার মোড় অন্যদিকে। একটা সময় গিয়ে মনে হলো, আমার নিজের ভাবনাগুলোই যেন এখানে প্রতীয়মান।’

বন্ধুদের উদ্দেশে সভাপতি বলেন, ‘সব সময় বেশি বেশি করে বই পড়বেন। নিজের জানার পরিধিকে সমৃদ্ধ করবেন। একই সঙ্গে মনের খোরাক জোগাড় হবে বইয়ের ভেতর।’

পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক উম্মে ফারহিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শিমুল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহিম, পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক আফরিনা আনিকা, দপ্তর সম্পাদক ধ্রুব ভূঁইয়া, দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক আরাফাত শিহাব, বন্ধু ইমতিয়াজ হোসেন, বিপ্লব আহমেদ, রিপন ইসলামসহ আরও অনেকে।

বন্ধু, নোয়াখালী বন্ধুসভা