নোবিপ্রবি বন্ধুসভার ‘সহমর্মিতার ঈদ’

নোবিপ্রবি বন্ধুসভার ‘সহমর্মিতার ঈদ’ছবি: বন্ধুসভা

‘সবার সুখে হাসব আমি/ কাঁদব সবার দুখে,
নিজের খাবার বিলিয়ে দেব/ অনাহারীর মুখে।’

ছোটবেলায় আমরা পড়েছি, ‘ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি’। কিন্তু বড় হয়ে জানতে পেরেছি, ঈদ মানে ‘খুশি’ কিংবা ‘আনন্দ’ হলেও ঈদ সবার ঘরে খুশি হয়ে আগমন করে না। কারও কারও ঘরে ঈদ আসে কর্তাব্যক্তির মাথায় দায়িত্বের ভার নিয়ে। নিম্নবিত্ত পরিবারের কর্তাব্যক্তি নিজের নিয়তির প্রতি আক্ষেপ ছুড়ে দিয়ে হিসাব মেলান, কীভাবে সন্তানদের আরেকটু খুশি করা যায়, কীভাবে অন্য দিনের চেয়ে ঈদের দিনে আরেকটু স্পেশাল কিছু করা যায় সন্তানদের জন্য।

এই নিম্নবিত্ত, হতদরিদ্র পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে, তাদের দায়িত্বের বোঝাকে সামান্য লাগব করতে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা আয়োজন করেছে ‘সহমর্মিতার ঈদ’। ২০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবনের নিচতলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়।

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের ক্যানসারে আক্রান্ত শিক্ষার্থী ফারসিমের চিকিৎসা সহায়তায় অর্থ প্রদান করেন বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

বন্ধুদের নিজস্ব অর্থায়ন এবং উপদেষ্টাদের সহায়তায় পাঁচটি দরিদ্র পরিবারকে ঈদের খাদ্যসামগ্রী কিনে দেওয়া হয়। খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে ছিল দুধ, চিনি, সেমাই, তেল, পেঁয়াজ, ছোলাবুট, মসুর ডাল, বাদাম, পোলাওয়ের চাল ও কিশমিশ। এ ছাড়া সমপরিমাণ টাকা নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের ক্যানসারে আক্রান্ত শিক্ষার্থী ফারসিমের চিকিৎসা সহায়তায় প্রদান করেন বন্ধুরা।

বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন নোবিপ্রবি বন্ধুসভার উপদেষ্টা সৈয়দ মো. সিয়াম, শাহিন কাদির ভূঁইয়া, সভাপতি আবু রায়হান, সহসভাপতি ঊর্মি বণিক, ইসরাত জাহান, সাধারণ সম্পাদক নাহিন সুলতানা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উম্মে মেহেরুন সরকার, সৌরভ দে, সাংগঠনিক সম্পাদক সৌরভ খান, অর্থ সম্পাদক সানজিদ মুনতাসিরসহ অন্য বন্ধুরা।

উপদেষ্টা সৈয়দ মো. সিয়াম বলেন, ‘নোবিপ্রবি বন্ধুসভাকে ধন্যবাদ। তারা প্রতিবছরের মতো এবারও এই প্রোগ্রাম আয়োজন করেছে। বিশেষ করে বন্ধুরা নিজেদের পকেট খরচের টাকা, টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে এই প্রোগ্রামগুলো বাস্তবায়নে সহায়তা করে থাকে। এ জন্য বন্ধুদের শুভেচ্ছা। আশা করি, তারা এ ধরনের সমাজসেবামূলক কার্যক্রম ভবিষ্যতেও চালিয়ে যেতে পারবে।’

সভাপতি আবু রায়হান বলেন, ‘সাধারণত প্রতিবছর সহমর্মিতার ঈদ কার্যক্রমে আমরা ২০-২৫টি পরিবারকে খাদ্যসহায়তা এবং নতুন কাপড় দিয়ে সহায়তা করে থাকি। কিন্তু এ বছর আমরা পাঁচটি পরিবারকে খাদ্যসহায়তা প্রদানের পাশাপাশি সমপরিমাণ টাকা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত ফারসিম ভাইয়ের চিকিৎসাসহায়তায় প্রদান করেছি। আশা করি, সবাই ন্যূনতম উপকৃত হবে।’

পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, নোবিপ্রবি বন্ধুসভা