মানবসভ্যতার বহু ভিত্তি গড়ে উঠেছিল প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতায়

চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসরছবি: বন্ধুসভা

এ কে এম শাহনাওয়াজের প্রাচীন সভ্যতা সিরিজ ‘মেসোপটেমিয়া’ বই নিয়ে পাঠচক্র করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভা। ২২ নভেম্বর বিকেলে জেলা সাধারণ পাঠাগার প্রাঙ্গণে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

বইটির মূল আলোচনায় বন্ধু রামিজ আহমেদ বলেন, মেসোপটেমিয়া শব্দের অর্থ ‘দুই নদীর মধ্যবর্তী স্থান’—তাইগ্রিস ও ইউফ্রেতিস নদীর মধ্যবর্তী বর্তমান ইরাক অঞ্চলে এই সভ্যতার বিকাশ ঘটে। উর্বর মাটির কারণে এখানকার মানুষ প্রাচীনকালেই কৃষিভিত্তিক জীবন গড়ে তোলে। ধীরে ধীরে এখানে উর, উরুক, লাগাশ, ব্যাবিলনসহ বহু নগররাষ্ট্র গড়ে ওঠে, যা পৃথিবীর প্রথম দিকের শহরগুলোর উদাহরণ। মেসোপটেমিয়ার অন্যতম বড় অর্জন হলো কিউনিফর্ম লিপি, যা মানবজাতির প্রথম দিকের লিখনপদ্ধতি। ব্যবসা, হিসাব, আইন, সাহিত্য—সবকিছুই তারা মাটির ফলকে লিখে রাখত। এখানেই তৈরি হয় বিখ্যাত হাম্মুরাবির আইনসংহিতা, যা বিশ্বের প্রথম লিখিত আইনগুলোর একটি।

রামিজ আহমেদ বলেন, ধর্মীয় জীবনে তারা বহু দেব-দেবীর উপাসনা করত এবং বিশাল জিগগুরাট মন্দির নির্মাণ করত। গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যায় তাদের অবদানও গুরুত্বপূর্ণ। তারা প্রথম ৩৬০ ডিগ্রির বৃত্ত আবিষ্কার করে। তারাই সপ্তাহ সাত দিনে প্রচলন করে। এ অঞ্চলে সেচব্যবস্থা, কৃষি, মৃৎশিল্প, বাণিজ্য, ধাতুশিল্প অত্যন্ত উন্নত ছিল। পারস্য উপসাগর থেকে সিন্ধু উপত্যকা পর্যন্ত তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। প্রশাসন ও সমাজব্যবস্থাও অত্যন্ত সুসংগঠিত ছিল।

পাঠ প্রতিক্রিয়ায় সভাপতি আরাফাত মিলেনিয়াম বলেন, ‘মানবসভ্যতার বহু ভিত্তি গড়ে উঠেছিল প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতায়। তাদের লিপি, আইন ও শহরগঠনের উন্নত ধারা আমাকে বিস্মিত করেছে। এত প্রাচীনকালে মানুষ এত সংগঠিত সমাজ ও জ্ঞানব্যবস্থা তৈরি করেছিল—এটি সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক।’

পাঠচক্রে উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি মো. আসাদুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক মাসরুফা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাফিউল হাসান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান, বইমেলা সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক ফাহিম আসেফ, কার্যনির্বাহী সদস্য ওয়ালিদ আহমেদ, বন্ধু সাবরিন আখতার, মানসুরা খাতুনসহ অন্যরা।

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভা