‘মানুষ’ কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম সাম্যবাদের দৃষ্টিতে পৃথিবীর সব মানুষ এক ও অভিন্ন জাতি, এ সত্যটি তুলে ধরেছেন। কবি এখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, জাতি প্রভৃতির বাইরে মানুষের আসল পরিচয় সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। মানবসেবা মহান কাজ, ক্ষুধার্তকে অনুদান সব ধর্মে স্বীকৃত। কিন্তু ‘মানুষ’ কবিতায় ক্ষুধার্ত ব্যক্তিটি মন্দিরের পূজারি ও মসজিদের মোল্লা দ্বারা নিগৃহীত হয়েছে। সাত দিন ক্ষুধার্ত থাকার কথা বলেও সে খাবার প্রার্থনা করে তাদের কাছে বঞ্চিত হয়েছে। অথচ আশি বছর ধরে কোনো প্রার্থনা ছাড়াই প্রভুর দেওয়া খাবার খেয়ে বেঁচে আছে। মানুষের মর্যাদা, সম্মান, উচ্চাসন—সবকিছু স্রষ্টার কাছে সমানভাবে বিচার্য।
সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘মানুষ’ কবিতাটি নিয়ে পাঠের আসর করে ভৈরব বন্ধুসভা। ৪ ডিসেম্বর প্রথম আলোর ভৈরব অফিসে অনুষ্ঠিত পাঠের আসরটি সঞ্চালনা করেন পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক তানসি নাহার। এটি ভৈরব বন্ধুসভার ১৮৮তম পাঠচক্র।
উপদেষ্টা সুমন মোল্লা বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘মানুষ’ কবিতা নিয়ে পাঠের আসর খুবই সময়োপযোগী। কাজী নজরুল ইসলাম কবিতাটিতে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে মানুষের মহিমা, ধর্মগ্রন্থ ও আচার অনুষ্ঠানের চেয়ে মানুষের গুরুত্ব এবং সমাজের তথাকথিত মোল্লা-পুরোহিতদের স্বরূপ উন্মোচন করেছেন, যা তাঁর সাম্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠা করে।
উপদেষ্টা সুমাইয়া হামিদ বলেন, পৃথিবীর সব মানুষ এক ও অভিন্ন জাতি। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, জাতি প্রভৃতির বাইরে মানুষের আসল পরিচয় সে মানুষ।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ধর্মের দোহাই দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে ধর্মের জ্ঞানকে সমাজে ভালোবাসারূপে প্রকাশ করলে সমাজ ও দেশ সুন্দর হয়।
বন্ধু মো. মাহিন বলেন, ‘সৃষ্টির সেবাই স্রষ্টার সেবা। অথচ আমরা জাতি-ধর্ম ভেদে মানুষকে পৃথক করে দিই।’
সাধারণ সম্পাদক মানিক আহমেদ বলেন, মানুষের মর্যাদা, সম্মান, উচ্চাসন—সবকিছু স্রষ্টার কাছে সমানভাবে বিচার্য। অথচ মানুষ তাকে ধর্মের নামে, জাতের নামে ভিন্ন ভিন্ন করে দেখে।
সভাপতি প্রিয়াংকা বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ধর্ম শিক্ষার প্রচুর অভাব। এখন এমন একটা পরিস্থিতি হয়েছে যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীই তাদের পাঠ্যবই ভালোভাবে অধ্যয়ন করে না। যার ফলে জ্ঞানের ঘাটতি থেকে যায়।’
পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, ভৈরব বন্ধুসভা