পৃথিবীতে যত বিপ্লবী জন্মেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন এরনেস্টো চে গুয়েভারা। দেশে দেশে চে গুয়েভারার ছবিযুক্ত টুপি ও টি-শার্ট পরে তরুণরা আজও ঘুরে বেড়ান। বাড়িতে এখনো অনেকেই চের ছবি ঝুলিয়ে রাখেন। বলা হয়ে থাকে, যৌবনে অন্তত একবার চের আদর্শে আকৃষ্ট না হওয়া মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। যৌবন এমন একটি সময়, যখন মানুষ সাম্যের চেতনায় উদ্দীপ্ত; অন্যায় মেনে নেন না, সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন এবং বিপ্লব নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। চে গুয়েভারা একটি অমর বিপ্লবের নাম। বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের কাছে তিনি অনুপ্রেরণার প্রতীক।
৯ অক্টোবর রাতে চে গুয়েভারার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভার ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় এ কথাগুলো বলেন বক্তারা। রাত সাড়ে নয়টায় গুগল মিটে এটি অনুষ্ঠিত হয়। আরাফাত মিলেনিয়ামের সভাপতিত্বে সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসরুফা খাতুন।
এ সময় চেকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন উপদেষ্টা আনোয়ার হোসেন, অর্থ সম্পাদক আলীউজ্জামান নূর, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সম্পাদক সাঈদ মাহমুদ প্রমুখ। তাঁরা বলেন, ‘বিপ্লবীরা মরে না; তাঁরা মানুষের অন্তরে বেঁচে থাকেন। তেমনি একজন ছিলেন চে গুয়েভারা। তিনি সারা বিশ্বে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য মানুষের মধ্যে অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছেন। মানুষের দুর্দশা, শোষণ, দারিদ্র্য ও সামাজিক শ্রেণিবিভাগের বিরুদ্ধে লড়তে তিনি মানুষকে উৎসাহিত করেছেন।
চে গুয়েভারা কিউবা, চিলি, পেরু, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, ভেনেজুয়েলা, কঙ্গো, বলিভিয়াসহ বহু দেশে বিপ্লবের বার্তা নিয়ে কাজ করেছেন। চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনা করলেও সংগ্রাম থেকে সরে আসেননি। যুক্তরাষ্ট্রমুখী শক্তিশালী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়েছেন; গেরিলা বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কিউবায় গেরিলা যুদ্ধে জয়ও অর্জন করেন। পরে বলিভিয়ায় লড়াই করার সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রশিক্ষিত বলিভিয়ান সেনাবাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি নিহত হন।
বক্তারা বলেন, ‘আজ চে মানেই বিপ্লব; চে মানেই শোষণের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস। তিনি বিংশ শতাব্দীর প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির মধ্যে একজন হিসেবে শ্রদ্ধার স্থান অর্জন করেছেন। মৃত্যুর পরও তাঁকে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও লাল পতাকায় মিছিলে অগ্রদূত হিসেবে দেখা যায়। চে ও বিপ্লব একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। আসুন, আমরা চের বিপ্লবী আদর্শ বুকে ধারণ করি এবং বলি, বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এগিয়ে চলো।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি মো. আসাদুজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান ও নাফিউল হাসান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান, বইমেলা সম্পাদক মেরাজুল ইসলাম, জেন্ডার ও সমতাবিষয়ক সম্পাদক জোবায়ের আহমেদ, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক সোনিয়া খাতুন, কার্যনির্বাহী সদস্য আহমেদ ওয়ালিদসহ অন্য বন্ধুরা।
অর্থ সম্পাদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভা