জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রচনা হলো ‘মৃত্যুক্ষুধা’। এটি তাঁর কালজয়ী ও বাংলা সাহিত্যের প্রথম সাম্যবাদী চেতনার উপন্যাস। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৩০ সালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ–পরবর্তী সময়ের একটি রচনা।
উপন্যাসটি শুরু হয় একটি দরিদ্র মুসলিম পরিবারের গল্প নিয়ে। যেখানে ফুটে উঠেছে দুঃখ-দারিদ্র্য, রোগ-শোক, ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষ, যা তাদের গ্রাস করে রাখে সর্বক্ষণ। যাদের একদিকে মৃত্যু আর অন্যদিকে ক্ষুধা। উপন্যাসের চরিত্ররা ক্ষুধার তাড়নায় ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করে। ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য পরিবারের মেজ বউকে এক যুদ্ধরত নারীর জীবন বেছে নিতে হয়েছে। এ উপন্যাসে যুদ্ধোত্তর সময়ের শ্রেণিবৈষম্য, অর্থসংকট ও নগরচেতনা প্রকাশ পেয়েছে।
২৯ মে উপন্যাসটি নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে মুরারিচাঁদ কলেজ বন্ধুসভা। সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজের অধ্যক্ষ বাংলোর বাগান প্রাঙ্গণে এটি অনুষ্ঠিত হয়। বইটির বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করেন প্রশিক্ষণ সম্পাদক চৌধুরী নাফিসা। তিনি বলেন, ‘উপন্যাসে ক্ষুধা, দারিদ্র্যের মধ্যেও ছিল রোমান্টিকতার ছোঁয়া। উপন্যাসটি পড়লে তৎকালীন যুদ্ধ–পরবর্তী সময়ের ধারণা পাওয়া যায়।’
সভাপতি মেহেদী হাসান বলেন, ‘উপন্যাসে ক্ষুধার তাড়নায় কেমন করে মানুষ ধর্মান্তরিত হতেও দ্বিধাবোধ করে না, কেমন করে নিজের সন্তানের মৃত্যু কামনা করে, কোন পরিস্থিতিতে মৃত্যুই তাদের কাছে ক্ষুধা হয়ে ওঠে, তা ফুটে উঠেছে। ক্ষুধা মানুষকে হিংস্র করে তোলে, ক্ষুধা মেটানোর জন্য মানুষ নিজেকেই বিসর্জন দিয়ে দেয়, সেই বিষয়টিও ফুটে উঠেছে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ সানজিদা রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক উদয় সরকার, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সম্পাদক তরিকুল ইসলাম, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক অনুপ দাস, বন্ধু ফাহিম আহমেদ, হিমেল সরকার, প্রধান দাস, মোশাহিদ আলী, সুজন তালুকদার, অভিনাশ পাল ও মাহি চৌধুরী।
সভাপতি, মুরারিচাঁদ কলেজ বন্ধুসভা