দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে ‘রাইফেল, রোটি, আওরাত’

ড্যাফোডিল বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসরছবি: বন্ধুসভা

কথাসাহিত্যিক আনোয়ার পাশার মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস ‘রাইফেল, রোটি, আওরাত’ নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে ড্যাফোডিল বন্ধুসভা। ১৯ জুন বিকেলে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির কবি জসীমউদ্‌দীন পার্কে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

পাঠচক্রে আলোচনা করেন নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক সাজেদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে শহীদ অধ্যাপক আনোয়ার পাশা রচিত এই উপন্যাসের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। লেখক নিজে বাংলাদেশের বিজয়ের প্রাক্কালে ১৪ ডিসেম্বর আলবদর বাহিনী কর্তৃক অপহৃত হয়ে শাহাদাতবরণ করেন।’ তিনি বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরুর দিনগুলোর অসামান্য বর্ণনা পাওয়া যায় উপন্যাসটিতে। ‘রাইফেল, রোটি, আওরাত’ উপন্যাসটি নতুন প্রজন্মকে সাহস, সহমর্মিতা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে।

পাঠচক্র শেষে ড্যাফোডিল বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

উপন্যাসটিতে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের বিবরণ পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অধ্যাপক সুদীপ্ত শাহীনকে দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক সুদীপ্ত শাহীন চরিত্রটি লেখক নিজেই। সুদীপ্ত শাহীন স্বাধীনতাসংগ্রামে প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ, পারিপার্শ্বিক পরিবর্তন ও তাঁর রক্তভেজা অভিজ্ঞতার বিবরণ তুলে ধরেছেন। লেখক ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতা, বাঙালির সংগ্রাম ও নারীর প্রতি সহিংসতার চিত্র তুলে ধরেছেন।

উপন্যাসে দেখা যায়, পাকিস্তানপন্থী চরিত্র মি. মালেক বিভিন্ন সময় ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে নিজের রূপ পরিবর্তন করেন। এমনকি তিনি ক্ষমতাসীন দলের জন্য কবিতা লিখে পত্রিকায় গুণগান করে খুশি করতেন। আবার ক্ষমতা পরিবর্তনের হাওয়া লাগতেই তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে তাঁর কলম। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নির্মম মৃত্যু ঘটে।

ড্যাফোডিল বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসর
ছবি: বন্ধুসভা

উপন্যাসে লেখক দেখিয়েছেন কীভাবে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালিদের নিপীড়ন করেছে। শুধু যুদ্ধ নয়, যুদ্ধের পেছনের মানবিক ট্র্যাজেডি, দুর্দশা ও নিরীহ মানুষের অসহায় দশা ফুটে উঠেছে। বইটির নামের সঙ্গে ‘আওরাত’ শব্দটি যুক্ত, যা থেকে নারীর প্রতি পাকিস্তানি বাহিনীর দৃষ্টিভঙ্গি অনুমান করা যায়। বাঙালিদের ক্ষোভ, প্রতিবাদ ও মনস্তাত্ত্বিক প্রতিরোধের ভাষা। লেখক নিজে ও তাঁর পুরো পরিবার এ যুদ্ধের ভুক্তভোগী। তিনি নিজের জীবন দিয়ে ইতিহাসের সাক্ষ্য রেখে গেছেন।

পাঠচক্রে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল বন্ধুসভার উপদেষ্টা মো. মিলন খান, সভাপতি নাজমুল হাসান, সহসভাপতি ঈশিতা মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক জাকিয়া লিমা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অনিক ভূষণ সাহা ও অদ্বিত আল নাফিউ, দপ্তর সম্পাদক পারমিতা নাগ, দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক রিজভী আমিন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক রাইয়ান শিকদার, কার্যনির্বাহী সদস্য আবিদুর রহমান, হেরেনা রুবাইয়াসহ অন্য বন্ধুরা।

সভাপতি, ড্যাফোডিল বন্ধুসভা