মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ

আলোচনা সভা ও ইফতার আয়োজন শেষে শারদা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার বন্ধুরাছবি: বন্ধুসভা

৩০ লাখ শহীদের আত্মদান এবং কোটি বাঙালির শত ত্যাগ ও তিতিক্ষার সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। ২৬ মার্চ সেই ঐতিহাসিক সংগ্রামের সূচনাক্ষণ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। এ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ইফতার আয়োজন করেছে ভারতের শারদা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা।

সাধারণ সম্পাদক রুবায়েত রায়হান চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সভাপতি নাজমুস সাকিব, সহসভাপতি তীর্থ রাজ সাহা, মেহেদী হাসান এবং মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক তাবিয়া তাসকিন। সভায় আলোচনার বিষয় ছিল ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ’।

সভাপতি নাজমুস সাকিব বলেন, ‘ঘাতক পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালির ওপর ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম গণহত্যা শুরু করে, তখন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আওয়ামী লীগ নেতাদের উপস্থিতিতে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করেন। ২৫ মার্চ রাত ১২টা ২০ মিনিটে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের মতো এতটা রক্তে রঞ্জিত সূর্যোদয় হয়তো এ দেশের মানুষ কখনো দেখেনি। আর ভবিষ্যতে দেখবেও না। কিন্তু এ এক নতুন সূর্য, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সূর্য। হাজার বছরের সংগ্রামমুখর সাহসী বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা।’

শারদা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার বন্ধুদের ইফতার
ছবি: বন্ধুসভা

মার্চ বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের মাস উল্লেখ করে সহসভাপতি তীর্থ রাজ সাহা বলেন, ‘বিশ্ব মানচিত্রে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামের নতুন একটি রাষ্ট্র সৃষ্টি হয় এ মাসেই। এই মার্চেই বাঙালির ওপর ভয়ংকর নারকীয় গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে আটকের আগেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে ‘স্বাধীন’ ঘোষণা করে দেশবাসীর উদ্দেশে একটি তারবার্তা পাঠান। ইপিআরের ওয়্যারলেস বার্তায় প্রচার করা হয় স্বাধীনতার ঘোষণা। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত “বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র” তৃতীয় খণ্ডে শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর, অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে এ ঘোষণা দেন তিনি, যা তৎকালীন ইপিআরের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। পরে চট্টগ্রামের স্থানীয় একটি বেতারকেন্দ্র থেকে ২৬ ও ২৭ মার্চ বেশ কয়েকজন শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন।’

মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক তাবিয়া তাসকিন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও জনগণকে সংগঠিত করতে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র প্রাথমিক ভূমিকা পালন করে। এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ও স্বাধীনতার ঘোষণাভিত্তিক তারবার্তার আদলে স্বাধীনতা ও স্বাধীনতাযুদ্ধ-সম্পর্কিত অনুষ্ঠান সম্প্রচার করেন এম এ হান্নান, সুলতানুল আলম, বেলাল মোহাম্মদ, আবদুল্লাহ আল-ফারুক, আবুল কাশেম সন্দ্বীপ, কবি আবদুস সালাম ও মাহমুদ হাসান।’

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, শারদা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা