মানুষের স্মৃতিশক্তি হারিয়ে গেলেও মানুষ কখনো ভাষা ভুলে না কেন? আমরা ভাষাকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করি, কিন্তু বাবার সঙ্গে করি না কেন? বাংলা ভাষায় প্রথম কে কোথায় কথা বলেছিলেন? বাংলা আমার মাতৃভাষা, আমরা রক্তের বিনিময়ে এ ভাষা পেয়েছি; কিন্তু মা সারা দিন ইংরেজি পড়তে বলে কেন? এমন মজার সব প্রশ্ন বর্ণমালা উৎসবের প্রশ্নোত্তর পর্বে অতিথিদের কাছে ছুড়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।
২৫ ফেব্রুয়ারি ফাগুনের শীতল হাওয়ায় কুয়াশা ঘেরা সকালে নোয়াখালীর মাইজদী বালিকা বিদ্যানিকেতনে শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছেলেমেয়েরা জড়ো হতে থাকে। তাদের উদ্দেশ্য ভাষার মাসে নোয়াখালী বন্ধুসভার অষ্টম বর্ণমালা উৎসবে অংশগ্রহণ করা। সকাল সাড়ে ৯টায় জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বর্ণমালা উৎসব ২০২৩ উদ্বোধনী পর্ব শুরু হয়।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মাইজদী বালিকা বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক রোকেয়া সুলতানা। উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল কাইয়ুম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহবুবুর রহমান ও নোয়াখালী বন্ধুসভার উপদেষ্টা মাহফুজের রহমান।
আয়োজনে যৌথভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করে আল-আমিন ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্স ও নোয়াখালী ড্রিম পার্ক। প্রায় সাড়ে ৩০০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে শুরু হয় বাংলার ওপর ৩০ মিনিটের কুইজ প্রতিযোগিতা। তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দুটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণমালা উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ ছিল বর্ণ প্রদর্শনী। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অপচনযোগ্য জিনিস দিয়ে তৈরি করে আনে দারুণ দারুণ সব বর্ণ।
বেলা ১১টায় শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান মাসুদ রহমান ও নোয়াখালী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আল হেলাল মোশারফ। শিক্ষার্থীদের দারুণ সব প্রশ্নের জবাব দেন তাঁরা। প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীরা জিতে নেয় পুরস্কার।
সাংস্কৃতিক পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন নোয়াখালী বন্ধুসভার সহসভাপতি আবু তাহের ও কবিতা আবৃত্তি করেন সাবেক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নিথিন রায়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে দুজন গান পরিবেশন করে।
দুপুর ১২টায় শুরু হয় ফলাফল ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণী পর্ব। দুই ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ৩৪ শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়। অতিথিরা সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষার চর্চায় সবাইকে উৎসাহ দেন।
সাধারণ সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা