এ কে এম শাহনাজের প্রাচীন সভ্যতার সিরিজ ‘চীন’ বই নিয়ে পাঠচক্র করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভা। ৪ ডিসেম্বর বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভা অফিসে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
পাঠচক্রের মূল আলোচনায় সাধারণ সম্পাদক মাসরফা খাতুন বলেন, ‘চীন সভ্যতা বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ও ধারাবাহিক সভ্যতা। এর সূচনা প্রায় খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০ সালের দিকে হলুদ নদীকে কেন্দ্র করে। কৃষিভিত্তিক এই সভ্যতা ধান ও গম উৎপাদন, সেচব্যবস্থা ও কৃষি প্রযুক্তির অগ্রগতিতে সমৃদ্ধ ছিল। শাং, ঝৌ, চিন, হানসহ বিভিন্ন রাজবংশের শাসনে চীনে গড়ে ওঠে শক্তিশালী কেন্দ্রীয় প্রশাসন, লিখনপদ্ধতি (অরাকল বোন স্ক্রিপ্ট), কনফুসীয় দর্শন, তাওবাদ ও লিগ্যালিজমের মতো মতবাদ, যা সমাজ ও রাষ্ট্রকে দীর্ঘকাল প্রভাবিত করে। চীনের উদ্ভাবন—কাগজ, দিকনির্ণয় যন্ত্র (কম্পাস) গানপাউডার, রেশম উৎপাদন ও মৃৎশিল্প—বিশ্বসভ্যতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। পাশাপাশি গ্রেট ওয়াল বা মহাপ্রাচীর গড়ে তোলে প্রতিরক্ষাকাঠামোর এক অনন্য দৃষ্টান্ত।’
মাসরফা খাতুন বলেন, বাণিজ্যের জন্য ‘সিল্ক রোড’ খুলে যায়, যা চীনকে এশিয়া-ইউরোপের সঙ্গে যুক্ত করে সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বিনিময় বাড়িয়েছে। পরিবারভিত্তিক সামাজিক কাঠামো, সম্রাটকেন্দ্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং কঠোর প্রশাসনিক শৃঙ্খলা চীনকে ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী সভ্যতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে, যা আজও আধুনিক চীনের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।
পাঠপ্রতিক্রিয়ায় সভাপতি আরাফাত মিলেনিয়াম বলেন, ‘চীন সভ্যতা সম্পর্কে পড়ে আমার মনে হয়েছে, মানব ইতিহাসে এ সভ্যতা সত্যিই একটি বিস্ময়। হলুদ নদীর তীরে গড়ে ওঠা তাদের উন্নত কৃষি, শাসনব্যবস্থা ও দর্শন সমাজকে যে শক্ত ভিত্তি দিয়েছিল, তা আজও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে কাগজ, কম্পাস, বারুদ ও মুদ্রণ প্রযুক্তি—এই আবিষ্কারগুলো বিশ্বের জ্ঞানবিজ্ঞান ও যোগাযোগব্যবস্থাকে বদলে দিয়েছে। চীনের পরিবারভিত্তিক সমাজ, কনফুসীয় নৈতিকতা ও সিল্ক রোডের বাণিজ্য তাদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও বিশ্বসম্পৃক্ততা দেখায়।’
পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আনোয়ার হোসেন, সহসভাপতি ফারাহ্ উলফাৎ রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাফিউল হাসান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান, পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান, কার্যনির্বাহী সদস্য ওয়ালিদ হাসান, সিফা বিনতে হাবিব, বন্ধু রামিজ আহমেদ, মুশফিক মাহদিসহ অন্যরা।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বন্ধুসভা