শিক্ষার্থীদের মাদক থেকে দূরে রাখতে ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সমাবেশ করেছে ঠাকুরগাঁও বন্ধুসভা। এতে চার শতাধিক শিক্ষার্থী লাল কার্ড দেখিয়ে মাদক ও বাল্যবিবাহকে ‘না’ বলেছে। ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে জেলা শহরের আর কে স্টেট উচ্চবিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। বন্ধু মাহফুজা মারিয়ার সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন আর কে স্টেট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মাদক ও বাল্যবিবাহবিরোধী ক্যাম্পেইন প্রথম আলো বন্ধুসভার একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। এ শপথ থেকে শিক্ষার্থীরা মাদক ও বাল্যবিবাহ থেকে নিজেদের দূরে রাখতে পারবে। অন্যদেরও সচেতন করতে পারবে।’ এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বন্ধুসভায় যুক্ত হতে আহ্বান জানান।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঠাকুরগাঁও কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হারুন আর রশিদ বলেন, ‘বাংলাদেশকে সুখী সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে হলে মাদক ও বাল্যবিবাহ দূর করতে হবে। আমাদের এমন একটা সমাজ গঠনে অঙ্গীকার করতে হবে, যেখানে মাদক থাকবে না। থাকবে না বাল্যবিবাহ।’
ঠাকুরগাঁও বন্ধুসভার উপদেস্টা ডা. শুভেন্দু কুমার দেবনাথ মাদক ও বাল্যবিবাহের কুফল তুলে ধরে বলেন, ‘মাদক ও বাল্যবিবাহ তরুণ প্রজন্মের জন্য অভিশাপ। এই অভিশাপের ছোবলে কত তরুণ যুবকের স্বপ্ন নষ্ট হচ্ছে, তার হিসাব নেই। আমরা চাই সারা দেশ মাদকের থাবা ও বাল্যবিবাহ থেকে মুক্ত হোক।’
আরও বক্তব্য দেন ঠাকুরগাঁও বন্ধুসভার উপদেস্টা ফেরদৌসী আরা বেগম, প্রথম আলো ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি মজিবর রহমান খান, ঠাকুরগাঁও বন্ধুসভার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শিহাব প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে প্রথম আলো প্রতিনিধি মজিবর রহমান খান মাদক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের শপথবাক্য পাঠ করান। এ সময় শিক্ষার্থীরা চিৎকার করে মাদক ও বাল্যবিবাহকে ‘না’ বলে। তাদের সঙ্গে যোগ দেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অতিথিরা।
আর কে স্টেট উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদাত হোসেন বলে, ‘মাদক একটি মরণব্যাধি। আজ আমরা মাদককে লাল কার্ড দেখিয়ে শপথ নিয়েছি, কখনো মাদক গ্রহণ করব না। বন্ধুবান্ধবকেও মাদক থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দেব।’
নবম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী লামিয়া জান্নাত বলে, ‘নিজে বাল্যবিবাহ করব না ও পাড়া–প্রতিবেশী বোনদের বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা করব, সে জন্য শপথ করেছি। পরিবারের সবাইকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করব।’
আরেক শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার বলে, ‘গ্রামে বাল্যবিবাহ বেশি হচ্ছে। বাল্যবিবাহের হাত থেকে সহপাঠীদের রক্ষা করব। বাল্যবিবাহ ও মাদক প্রতিরোধে শপথও নিয়েছি।’
বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শিহাব বলেন, ‘আমরা পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বিদ্যালয়ে মাদক ও বাল্যবিবাহবিরোধী ক্যাম্পেইন চালিয়ে যেতে চাই।’
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও বন্ধুসভার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক সিয়ামুর রশিদ, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি সম্পাদক তপু রায়, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, প্রচার সম্পাদক এস এম আলিফ, বন্ধু আল নাফিস, তাকিয়া, মৈত্রী সরকার, শ্রেয়া রায়, তানজিম হোসেন, অপূর্ব দাশসহ অন্য বন্ধুরা।
স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সম্পাদক, ঠাকুরগাঁও বন্ধুসভা