বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক নাটক দীনবন্ধু মিত্র রচিত ‘নীল–দর্পণ’। ১৮৬০ সালে ঢাকার প্রথম বাংলা ছাপাখানা ‘বাংলা প্রেস’ থেকে নাটকটি প্রকাশিত হয়। তুমুল জনপ্রিয় এই নাটক ১৮৬১ সালে ‘Nill Durpan, Or the indigo planting mirror’ নামে ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়। ইংরেজি অনুবাদ করেন বাংলা সনেটের জনক মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং অনুবাদ প্রকাশ করেন খ্রিষ্টান পাদরি রেভারেন্ড লং। ভীতিকর ব্যাপার হচ্ছে, এই নাটকের অনুবাদ প্রকাশের জন্য রেভারেন্ড লং সেই সময় রাজদ্রোহিতার অপরাধে দণ্ডিত হন।
তখনকার ভারতবর্ষে ইংরেজসহ অন্যান্য ইউরোপীয় বণিকেরা ভারতবর্ষে এসে কৃষকদের ধানের পরিবর্তে নীল চাষে বাধ্য করতে থাকেন। তাদের উৎসাহ ও চাহিদার কারণে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হতো কৃষকদের। কারণ, যে জমিতে একবার নীল চাষ করা হয়, সেই জমিতে আর কখনো অন্য কিছু উৎপাদন করা যেত না। নাটকটি তৎকালীন সমাজে এবং সাধারণ মানুষের আবেগে কতটা গভীর দাগ কেটে ছিল, তা নিচের একটি ঘটনা থেকে জানা যায়।
একবার নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার সময় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ইংরেজদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশে নীলকর উডের ভূমিকায় অভিনয়কারী অর্ধেন্দুশেখর মুস্তাফিরের দিকে জুতা ছুড়ে মেরেছিলেন।
ঐতিহাসিক এই নাটক নিয়ে ১১ জুলাই সিলেট বন্ধুসভা কক্ষে পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হয়। ‘নীল–দর্পণ’ নাটকের পাঠ পর্যালোচনা করেন বন্ধু শেখ ফয়সাল আহমেদ। চরিত্র বিশ্লেষণ করেন বন্ধু ফারিহা হক। নাটকে তখনকার ভারতবর্ষের নানা সামাজিক-রাজনৈতিকসহ নানা সমসাময়িক ঘটনা উঠে আসে।
পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন বন্ধু কিশোর দাশ, দেব রায় সৌমেন, মামুন ফেরদৌস, পিয়াস সরকার, জয় তালুকদার, সুমন দাশ, নাজিফা জাহান, মিনথিয়া শাখা, যুবারাজ রায়, চৈতী সূত্রধর, জুনেদ আহমেদসহ অন্য বন্ধুরা।
সাধারণ সম্পাদক, সিলেট বন্ধুসভা