লালন ফকির এক নিঃসঙ্গ সাধক

মেহেরপুর সরকারি কলেজ মিলনায়তনে ‘লালন ফকির এক নিঃসঙ্গ সাধক’ বই নিয়ে পাঠচক্রের আসর ও আলোচনা সভাছবি: বন্ধুসভা

লালন ফকির ছিলেন একাধারে একজন আধ্যাত্মিক বাউল সাধক, মানবতাবাদী, সমাজসংস্কারক ও দার্শনিক। তাঁর গানের মধ্যে সন্ধান পাওয়া যায় এক বিরল মানবদর্শনের। তিনি লালন ফকির বা লালন সাঁই নামেও পরিচিত। মৃত্যুর শতবর্ষ পর আজও বেঁচে আছেন তাঁর গানের মাধ্যমে। তাঁর লেখা গানের কোনো পাণ্ডুলিপি ছিল না। তবে গ্রামবাংলায় আধ্যাত্মিক ভাবধারায় তাঁর রচিত গান ছড়িয়ে পড়ে লোকের মুখে মুখে।

৯ মার্চ বেলা ১১টায় মেহেরপুর সরকারি কলেজ মিলনায়তনে ‘লালন ফকির এক নিঃসঙ্গ সাধক’ বই নিয়ে পাঠচক্রের আসর ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজন করে মেহেরপুর বন্ধুসভা। সঞ্চালনা করেন মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক বশির আহমেদ।

মেহেরপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মেরিনা খাতুন বলেন, লালন সাধকের জীবন নিয়ে লেখক আবদুল্লাহ আল আমিন তাঁর বইটিতে মানুষ ও মানবিকতার কথা বলেছেন। সমাজের বৈষম্য ভেদ করে সমাজব্যবস্থাকে নতুন আলোর পথ দেখিয়েছেন।

আরেক শিক্ষার্থী ফারজানা ইয়াসমিন বলেন, সব ধর্মের বাইরে মানবিকতা প্রকাশ পেয়েছে। লালনের গান আবেগঘন করেছে বাঙালি সমাজব্যবস্থাকে। নতুন আলোর পথ দেখিয়েছে। ধর্ম-বর্ণ ভেদ করে মানবতাকে সর্বোচ্চ সম্মান দেখিয়েছেন।

মেহেরপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সানজিদা ফেরদৌস বলেন, লালন সাধকের বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে অনেক বিষয় সামনে চলে আসবে। প্রায় দুই হাজার গান তিনি রচনা করে গেছেন। মানুষের মুখে মুখে যা আজও শোনা যায়।

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খেজমত আলী মালিথা বলেন, বই পড়ার প্রবণতা বৃদ্ধি করতে হবে। লালন সাধকের কথা বলতে গেলে সহজিয়া মত। এই মত মানুষের কথা বলে, আলোর পথের কথা বলে, লালন-দর্শনকে তুলে ধরতে হবে। সমাজে মানুষকে ভালোবাসতে শেখায়।

মেহেরপুর বন্ধুসভার সভাপতি আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, ‘বই লেখার প্রেরণা আমি বাবা, দাদার কাছ থেকে পেয়েছি। তাঁরা চাইতেন যেন আমি লেখক হই। আর লালন ফকিরের বিষয়ে খুব ছোটবেলা থেকে লালনসংগীত আমাকে কাছে টানত। একজন অশিক্ষিত মানুষ কীভাবে এত ভাবগাম্ভীর্যের গান লিখতে পারেন, বিষয়টি আমাকে আন্দোলিত করে। লালন বিষয়ে পড়ার আবেগ তৈরি হয়।’

পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক এ এইচ এম রশিদুল ইসলামসহ বন্ধুসভার বন্ধুরা। পাঠচক্র শেষে গান পরিবেশন করেন বন্ধু অর্পণ।