বাংলাদেশের স্বাধীনতার এক বাস্তব দলিল ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’

চবি বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসরছবি: বন্ধুসভা

খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক শহীদুল জহিরের লেখা উপন্যাস ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’। এটি ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসের পটভূমি গড়ে ওঠে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নৃশংসতা ও তৎপরবর্তী সময়ের সামাজিক বাস্তবতা, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির পুনরুত্থান ও স্বাধীনতার আশা ভঙ্গের কাহিনি নিয়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের পটভূমিতে রচিত এটি একটি নাতিদীর্ঘ উপন্যাস।

১১ ফেব্রুয়ারি ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’ বইটি নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে চবি বন্ধুসভা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘর প্রাঙ্গণে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

পুরো উপন্যাসের ভাঁজে ভাঁজে একাত্তর–পূর্ববর্তী বাংলাদেশ থেকে শুরু করে যুদ্ধের সময় এবং পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচারের শাসন গ্রহণ পর্যন্ত বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের চিত্র ফুটে উঠেছে। সেই সঙ্গে ফুটে উঠেছে জীবনের বাস্তবতা, মুক্তিযুদ্ধের কথা ও মানব মনের অন্তর্দাহের কথা।

বন্ধু জেসমিন বিনতে শারমিন বলেন, গ্রন্থটিতে অত্যন্ত সুনিপুণভাবে বর্ণনা করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদারদের তাণ্ডবলীলার কাহিনি ও সাধারণ বাঙালিদের জাতীয়তাবাদী চেতনার কথা। ক্ষমতার লোভে কিছু পথভ্রষ্ট বাঙালির মানসিকতা কতটা বিকৃত হতে পারে, সেটিও লেখক তুলে ধরেছেন। ছোটগল্পের মতো অনেকটা নাটকীয় ভঙ্গিতেই কাহিনির আবির্ভাব। উপন্যাসটি মুক্তিযুদ্ধের, কিন্তু সূচনালগ্নেই যে কালজ্ঞাপক বর্ণনা ঔপন্যাসিক দেন, তা যুদ্ধের দেড় দশক কাল পরের বাস্তবতা।

সাধারণ সম্পাদক আলী আকরাম বলেন, ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’ বইটিতে লেখক বদু মাওলানা চরিত্রকে দিয়ে একাত্তরের রাজাকারদের অমানবিকতার চিত্র তুলে ধরেছেন। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বেশির ভাগ গল্প-উপন্যাসে কেবল মুক্তিযুদ্ধের করুণ কাহিনির কথা বর্ণনা করা হয়। কিন্তু শহীদুল জহির এ উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধ ও তৎপরবর্তী সময়ের তাণ্ডবলীলার বাস্তব চিত্রগুলোও ফুটিয়ে তুলেছেন। বইটি মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার এক বাস্তব দলিল।

পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি নুসরাত পাইরিন, ফাল্গুনী ভট্টাচার্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহনাফ হাসান, ইখলাস বিন সুলতান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদ আনোয়ার, পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক তাসলিমা আক্তার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিনয় সূত্রধরসহ অন্য বন্ধুরা।