রুক্ষতার বিদায়, ফাগুনের পঞ্চম আর চড়ুইভাতির আদ্যোপান্ত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার চড়ুইভাতিছবি: বন্ধুসভা

শুষ্ক, কঠিন এক দীর্ঘ শীতের সমাপ্তি। শিমুল-পলাশ কিংবা কোকিলের সুর নিয়ে প্রকৃতি এবং টুকে রাখা ক্যালেন্ডার জানান দিচ্ছে ফাগুনের আভাস। এ আভাসে ভায়োলিনের মোহগ্রস্ত সুরের মতো বসন্তের আগমন। এমন সুরে সুরে তাল মিলিয়ে অনুষ্ঠিত হলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার চড়ুইভাতির আয়োজন।

স্থান ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহাড়ঘেরা ফুলে সজ্জিত বোটানিক্যাল গার্ডেন। এ যেন বিভূতিভূষণের ‘আরণ্যক’কেও হার মানাতে বাধ্য। ঝলমলে রোদ, শালিকের আনাগোনা এবং কসমস, ল্যান্টানা কিংবা ডালিয়ার ভিড়ে অনুষ্ঠান পর্ব শুরু হয় বন্ধুদের পরিচয়ের মাধ্যমে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নতুন ও পুরোনো বন্ধুরা। ‘ফাগুনেরও মোহনায়, মন মাতানো মহুয়ায়’ সুরের ছন্দে গ্রামীণ ঐতিহ্যের টানে অনুষ্ঠিত হয় ছেলেদের মোরগলড়াই আর মেয়েদের পিলোপাসিং খেলা। এ পর্ব শেষ হতে না হতেই দুপুরের পূর্বাভাস এবং মুখরোচক খাবারের আয়োজন।

ছেলেদের মোরগলড়াই
ছবি: বন্ধুসভা

মধ্যাহ্নভোজ শেষে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ‘আমি সেই কবিদের কবিতা, যাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়া জীবন থেকে স্রষ্টা পেয়েছে নতুন নতুন সৃষ্টি’, স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন আমিন উদ্দিন ও তন্ময় দত্ত মিশু। একে একে মারমা ভাষার গান, বাঙালি নাচ ও ফাগুনের গানে মেতে ওঠেন বন্ধুরা। এ পর্বের শেষ হয় প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ‘আমি বাংলায় গান গাই, আমি বাংলার গান গাই’ গানটি দিয়ে।

কমলা রঙের সূর্য, পাহাড়ের সাদা মেঘের ঝাপসা চেহারা আর ইউক্যালিপটাসগাছে চড়ুই শালিকের আনাগোনা জানান দেয় সন্ধ্যার পর্ব। এ পর্বে চলে খেলায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও চড়ুইভাতির অন্তিম।

মেয়েদের পিলোপাসিং খেলা
ছবি: বন্ধুসভা

সহসভাপতি তন্ময় দত্ত মিশু বলেন, ‘চড়ুইভাতি আমাদের একটি বাৎসরিক অনুষ্ঠান। প্রতিবছরই নতুন বন্ধুদের নিয়ে এ আয়োজন করে থাকি। যেখানে নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয় পর্ব থেকে শুরু করে ভাব বিনিময় হয়ে থাকে। আমাদের যাঁরা সাবেক বন্ধু আছেন, তাঁদের উপস্থিতিতে একটি পুনর্মিলনও ঘটে উক্ত অনুষ্ঠানে। নানা রকম খেলা, সাংস্কৃতিক আয়োজন এবং ভালো-মন্দ খাওয়াদাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রত্যেকেরই একটা ভালো সময় কাটে, যা আমাদের সারা বছরের পরবর্তী অনুষ্ঠানগুলোয় বন্ধুদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আগ্রহ জাগিয়ে তোলে।’

বন্ধু, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা