‘বই পড়ার অভ্যাস জীবনে দারুণ উপলব্ধি এনে দিয়েছে’

দিনাজপুর বন্ধুসভার পাঠের আসরছবি: বন্ধুসভা

বর্তমান সমাজের পরিস্থিতি ও নানা অপসংস্কৃতি, অসংগতি, মানুষের কাণ্ডজ্ঞানহীনতার চরম উদাহরণ দিয়ে সাবলীল ভাষায় এস এম চন্দনের লেখা বই ‘জীবন কথার ভগ্নাংশ’। বইটি নিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর পাঠচক্র করে দিনাজপুর বন্ধুসভা। প্রথম আলোর দিনাজপুর অফিসে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

লেখক বইটিতে বাস্তবতার কথা চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। যার একটি উদাহরণ, ‘আগে কারও বাসায় অতিথি আসলে পশ্চিম কোন দিকে, এটা জিজ্ঞেস করতেন কারণ নামাজ পড়বেন। কিন্তু বর্তমানে বাসায় অতিথি আসলে জিজ্ঞেস করেন, ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড কী?’

লেখকের ভাষ্যমতে, বর্তমানে প্রায় সবাই নিজেকে আধুনিক হতে বা ভাবতে পছন্দ করেন। কিন্তু সেই আধুনিকতার প্রকৃত সংজ্ঞা বা চেহারা জানা থাকে না অনেকেরই। আমরা নিজেকে ধার্মিক মনে করি, কিন্তু নিজের ধর্মকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে অন্য ধর্মের প্রতি আঘাত করে ফেলি। আমরা ধর্মকে নিজের ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করি, তার সুস্পষ্ট প্রমাণ মেলে রোজার মাসে।

এ ছাড়া সমাজে মানুষের রুচির যে পরিবর্তন, তা নিয়েও কথা তুলেছেন। পশ্চিমবঙ্গের টিভি সিরিয়াল সম্পর্কে বলেন, তাদের অসংগতিপূর্ণ নাটক এ দেশের নারীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু তা হওয়ার কথা নয়; বাংলাদেশের এত মানসম্মত নাটক থাকা সত্ত্বেও তারা অপসংস্কৃতির দিকে বেশি ঝুঁকছে।

লেখক শুধু অসংগতিই তুলে ধরেননি; তিনি নানা অবহেলিত মানুষের কথা তাদের একজন হয়ে প্রতিবাদ ও সমালোচনা করেছেন। যেমন খুলনার হরিজন সম্প্রদায়, চিংড়িশ্রমিক, চালকলশ্রমিক, চা–শ্রমিক, পরিবহনশ্রমিক প্রমুখ।

আলোচনার এক অংশে সভাপতি শুভ রায় বলেন, ‘বই পড়লে বিষণ্নতা কেটে যায়। বই একজন মানুষকে অন্ধকারময় জীবন থেকে আলোর মুখ দেখাতে পারে। প্রায়ই আমরা দেখতে পাই অনেক শিক্ষার্থী জীবনে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। এই ভুল থেকে বের হতে বই পড়তে হবে বেশি করে। তবেই নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং সিদ্ধান্তগুলো সঠিক হবে।’

সহসাংগঠনিক সম্পাদক শবনম মুস্তারিন বলেন, ‘ব্যক্তিজীবনের কথা যদি বলি, আমার ব্যাগে সব সময়ই কোনো না কোনো বই থাকেই। একটু ফাঁকা সময় পেলেই বই হাতে নিয়ে পড়ে ফেলি। বই পড়ার অভ্যাস জীবনে দারুণ উপলব্ধি এনে দিয়েছে।’

তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক, দিনাজপুর বন্ধুসভা