জামালপুর বন্ধুসভার পাঠচক্রে ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’
আবু ইসহাক রচিত ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ উপন্যাস নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে জামালপুর বন্ধুসভা। ১৮ জুলাই বিকেলে আশেক মাহমুদ কলেজ মাঠে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৫৫ সালে। এতে ১৯৪৩ সালের দুর্বিষহ দুর্ভিক্ষ এবং ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান-ভারত দেশভাগের সময়কার প্রেক্ষাপট উঠে এসেছে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কুসংস্কার, প্রচলিত ভ্রান্ত বিশ্বাস, ধর্মীয় গোঁড়ামি, পুরুষের নির্যাতন এবং গ্রামবাসীর শোষণে ধনবান লোকের অগ্রসরতাও।
শহর থেকে গ্রামে ভাত-কাপড়ের লড়াইয়ে হেরে যাওয়া জয়গুন, শফির মা, হাসু, মায়মুনসহ ট্রেনের যাত্রী ও গ্রামবাসীদের চোখে স্বাধীনতার মানে তখন চাল সস্তায় পাওয়া যাওয়া, কাপড়চোপড় সহজলভ্য হওয়া। সূর্য দীঘল বাড়ীতে থাকে জয়গুন, হাসু, মায়মুন, শফি, শফির মা। তারা কুসংস্কারে বিশ্বাস করে ফকিরকে দিয়ে পাহারাদার রাখে চারটা; যারা বাড়িতে জিন-ভূত, ঝামেলা দূর করবে বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। তাদের সবার ধারণা, সূর্য দীঘল বাড়ীতে লোকজন থাকতে পারে না। যারা থাকে, তারা নির্বংশ হয়, তাদের অসুখ-বিসুখের সঙ্গে লেপ্টে থাকতে হয় দিনের পর দিন, বর্ষের পর বর্ষ, তাদের উন্নতি হয় না।
তারপর এভাবেই চলতে থাকে। কাসু বঞ্চিত হয় মায়ের ভালোবাসা থেকে, মায়মুন বঞ্চিত হয় শ্বশুরবাড়ির মানুষের মন পাওয়া থেকে। হঠাৎ একদিন জয়গুনের সাবেক স্বামী করিম বকশের মৃত্যু হয় এই বাড়িতেই ফকিরের সহায়তায় পাহারাদার বদলাতে গিয়ে। সবাই তখন আরও নিশ্চিত হয় বাড়িটার সমস্যার বিষয়ে। তারপর তারা আবার বেরিয়ে পড়ে বাড়ি ছেড়ে। এভাবেই সমাপ্তি ঘটে উপন্যাসটির।
পাঠচক্রে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক রুবেল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম খান, পাঠচক্র ও পাঠাগার সম্পাদক সামিতা তাবাসসুম, বন্ধু মোহাম্মদ রাফি, শাকিল হোসেন ও সোহেল।
বন্ধু, জামালপুর বন্ধুসভা