ক্যামব্রিয়ান বন্ধুসভার উদ্যোগে উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতা

বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে বিচারকেরা
ছবি: বন্ধুসভা

আশ্বিনের ১৯ তারিখ, বুধবার। শরৎকাল। রোদের সঙ্গে মেঘের লুকোচুরি খেলা। এই চনমনে রোদ। আবার হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি। শরতের আবাহনে কাশফুল তার শুভ্রতা ছড়িয়ে দিচ্ছে আকাশ–বাতাসে। স্নিগ্ধ ফুলের দেশে মৌমাছিদের গুঞ্জরণ। মধু আহরণে ব্যস্ত মৌ। মধ্যগগনে সূর্যের আনাগোনা। বেলা ঠিক দুইটা। ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তন। বন্ধুসভার বন্ধুরা একে একে প্রবেশ করছে মিলনায়তনে। ধীরে ধীরে অতিথিরা প্রবেশ করলেন। সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো ‘উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতা’।

জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন বন্ধুসভার বন্ধুরা। সঞ্চালনার পাশাপাশি তানজিম নুসরাতের কণ্ঠে পরিবেশিত হয় বন্ধুসভার উদ্বোধনী সংগীত। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ সোহেল আহমেদ, বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সহসভাপতি সাইদুল হাসান, ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবন-১০–এর সমন্বয়ক জাহিদুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের প্রধান আশরাফুল আলম।

ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ সোহেল আহমেদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বন্ধুসভা একটি মানবিক সংগঠন। যে সংগঠনের বন্ধুরা মানবতার সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখেন। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বড় স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন। এই সংগঠনের কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা হয়ে উঠবে বোধসম্পন্ন মানুষ। তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশ পৌঁছে যাবে উন্নতির শিখরে।’

উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় তিন বিজয়ী
ছবি: বন্ধুসভা

বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের সহসভাপতি সাইদুল হাসান বলেন, ‘বন্ধুসভা প্রথম আলো পত্রিকার পাঠক সংগঠন। এই সংগঠন মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে। বিশ্বাস করে অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনের। আগামীর বাংলাদেশ গড়ার জন্য সারা দেশে বন্ধুসভার রয়েছে দুই লক্ষাধিক বন্ধু। তাঁরা দেশের যেকোনো দুর্যোগময় অবস্থায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। প্রতিবছর হাজার হাজার বৃক্ষরোপণ করে। ঈদে দরিদ্র শিশুদের হাতে তুলে দেয় রঙিন জামা। দরিদ্র পরিবারের হাতে তুলে দেয় খাদ্যসামগ্রী। শিশুদের হাতে তুলে দেয় বই, খাতা ও কলম। বন্ধুরা ভাঙা রাস্তা মেরামত করে দেয়। বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে অসহায় বৃদ্ধদের পাশে দাঁড়ায়। বন্ধুরা পাঠচক্র করে। কীভাবে ক্যারিয়ার গড়তে হয় তার প্রশিক্ষণ দেয়। বন্ধুরা গান করে। নাচ করে। ভালো চলচ্চিত্র দেখে।’

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বন্ধুসভায় যুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা ভালো ভালো কাজ শেখে। এসবের মধ্য দিয়ে তারা হয়ে উঠছে প্রকৃত মানুষ।’ ইংরেজি বিভাগের প্রধান আশরাফুল আলম বলেন, ‘বন্ধুসভার মাধ্যমে বন্ধুরা মানবিক গুণাবলির পরিচর্যা করেন। শেখেন নিজেকে ভালোবাসতে, দেশকে ভালোবাসতে।’

আলোচনা পর্ব শেষে শুরু হয় উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতায় ১৮ জন বন্ধু অংশগ্রহণ করে। শিক্ষকদের চুলচেরা বিচারকার্যের মধ্য দিয়ে নির্বাচন করা হয় সেরা তিনজনকে। প্রথম স্থান অর্জন করে আহনাফ তাজোয়ার জারিফ, দ্বিতীয় স্থান আহসান হাবিব সিয়াম ও তৃতীয় স্থান অর্জন করে ঈশ্বর কর্মকার।