‘লালসালু’ উপন্যাস নিয়ে মিরপুর বন্ধুসভার পাঠচক্র

মিরপুর বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসর।

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্‌ রচিত কালজয়ী উপন্যাস ‘লালসালু’ নিয়ে পাঠচক্র করেছে মিরপুর বন্ধুসভা। ২৬ সেপ্টেম্বর রাত ১০টায় ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্ম গুগলমিট অ্যাপে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

সেখানে উপন্যাসের বিষয়বস্তু, চরিত্র, পরিবেশ বর্ণনা এবং লেখকের মুনশিয়ানা তুলে ধরে উপদেষ্টা অপূর্ব বড়ুয়া বলেন, কুসংস্কারে যাপিত গ্রামীণ জীবনের গল্প ‘লালসালু’। গ্রামীণ সমাজের বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তুলতে অনবদ্য জীবনবোধ চিত্রায়ণে জীবন্ত উপমার ব্যবহার, গ্রামীণ ভাষা এবং ধর্মীয় গোঁড়ামি সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে এই উপন্যাসে।

আলফা-বাংলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শফিক উদ্দিন বলেন, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্‌র ‘লালসালু’ এক অনন্য সৃষ্টি। ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত এই উপন্যাস কেবল একটি কাহিনি নয়, এটি গ্রামীণ জীবনের একটি অন্তরঙ্গ দলিল। লেখক উপন্যাসটিকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন, যা ধর্মীয় কাঠামোর আড়ালে গড়ে ওঠা এক গ্রামীণ সমাজের বাস্তবতা। বাঙালি মুসলিম সমাজে ধর্মকে নিয়ে গড়ে ওঠা এ গল্প যেন আমাদের সমাজব্যবস্থায় অন্ধ ধর্মীয় বিশ্বাস, কুসংস্কার ও শিক্ষার অভাবে সমাজ কীভাবে প্রতারিত হতে পারে, মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে গড়ে ওঠা এক অসৎ ব্যবস্থার চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।

মিরপুর বন্ধুসভার উপদেষ্টা রুবেল হোসেন বলেন, ‘‎কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদ লোকচক্ষুর অন্তরালে এক অজানা কবরের ওপর লাল কাপড় বিছিয়ে সেটিকে মাজার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে নিজেকে একজন পীর বলে দাবি করে। এভাবেই সে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে ধীরে ধীরে সমাজে নিজের কর্তৃত্ব কায়েম করে। মজিদ ধর্মকে কেবল ভক্তির বিষয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেনি, সে এটিকে ক্ষমতা, প্রতারণা ও শোষণের হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তুলেছে।’

পরে উন্মুক্ত আলোচনায় বন্ধুরা কুসংস্কারের শৃঙ্খলে নিদারুণভাবে বন্দী অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থবির গ্রামীণ সমাজের একটি চিত্র তুলে ধরায় লেখকের সাহসিকতার প্রশংসা করেন। পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন সভাপতি মুহাইমিনুর রহমান, সাবেক সহসভাপতি স্বদেশ বিশ্বাস, সহসাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল মাশরুক, দপ্তর সম্পাদক মাসুরা আক্তার, কার্যনির্বাহী সদস্য রোমান শেখ, মুশফিকুর রহমান, বন্ধু তানজিলুর রহমান ও মেহেরাব ইবনে সালাম।