বিভূতিভূষণের ‘হিঙের কচুরি’—মানবিকতা ও আত্মার টানের গল্প

নোয়াখালী বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসরছবি: বন্ধুসভা

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ছোটগল্প ‘হিঙের কচুরি’ নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে নোয়াখালী বন্ধুসভা। ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে প্রথম আলো নোয়াখালী অফিসে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

সাংগঠনিক সম্পাদক সানি তামজীদের পরিচয় পর্বের পর শুরু হয় আলোচনা। ‘হিঙের কচুরি’ গল্পে লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিষিদ্ধ পল্লির মানুষের জীবনমান, গ্রাম ও শহরের পরিবেশের তুলনা, স্মৃতিকাতরতা এবং প্রকৃতির প্রতি টানকে খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন।

দপ্তর সম্পাদক নয়ন চন্দ্র কুরী বলেন, ‘হিঙের কচুরি এমন একটি ছোটগল্প, যা থেকে উপলব্ধি করতে পারি—রক্তের সম্পর্কের চেয়েও আত্মার সম্পর্ক গভীর, যা জন্মান্তরেও অটুট থেকে যায়।’

দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিষিদ্ধ পল্লির মানুষদের ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করেছেন। আমাদের সমাজে যাঁদের ঘৃণার চোখে দেখা হয়, গল্পটিতে তাঁদের মানবিক সত্তা, মমত্ববোধ এবং স্নেহময় দিকটি সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।’

পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক সাহিদা রেশমি বলেন, ‘বছর পেরিয়ে গেলেও আত্মার টান একই রকম থেকে যায়। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে সেই টান একসময় আবার মিলিত হয়—“হিঙের কচুরি” গল্পে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তা অনন্যভাবে তুলে ধরেছেন।’

সাংগঠনিক সম্পাদক সানি তামজীদ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্মের সামগ্রিক মূল্যায়ন করে বলেন, ‘গ্রামীণ জীবন, সমাজের উপেক্ষিত মানুষ এবং মানবিক সম্পর্কগুলোকে তিনি অনবদ্যভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাঁর লেখনীতে জীবনের বাস্তবতা যেমন আছে, তেমনি আছে মমত্ব ও সহমর্মিতা।’

বন্ধু শান্ত দে গল্পটির প্রতি নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘পারিবারিক বিড়ম্বনায় অন্ধকার জগতে প্রবেশ করলেও কুসুমের মতো মেয়েরা শেষ পর্যন্ত ঘরেই ফিরতে চায়, আপনজনকেই খোঁজে। তাই খোকার সঙ্গে তাঁর যে আত্মার বন্ধন তৈরি হয়েছে, তা জাতপাতের ঊর্ধ্বে।’

পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহবুবুর রহমান, নোয়াখালী বন্ধুসভার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজকির হোসেন ও ধ্রুব ভুইঞা, বন্ধু ফয়সালসহ আরও অনেকে।

দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা