ভাষাসৈনিকের স্বীকৃতির দাবিতে মানববন্ধন

শহীদ ভাষাসৈনিক আনোয়ার হোসেনকে দেশের প্রথম ভাষাসৈনিকের স্বীকৃতি এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদার দাবিতে জেলা প্রেসক্লাবের সামনে সাতক্ষীরা বন্ধুসভার উদ্যোগে মানববন্ধনছবি: বন্ধুসভা

শহীদ ভাষাসৈনিক আনোয়ার হোসেনকে দেশের প্রথম ভাষাসৈনিকের স্বীকৃতি এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদার দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় জেলা প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে শহীদ ভাষাসৈনিক আনোয়ার হোসেন স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটি ও সাতক্ষীরা বন্ধুসভা।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শহীদ ভাষাসৈনিক আনোয়ার হোসেন স্মৃতি সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস কে হাসান, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ আহমেদ বাপ্পী, নাগরিক নেতা মাধব দত্ত, বন ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সভাপতি আদিত্য মল্লিক, সাতক্ষীরা বন্ধুসভার দপ্তর সম্পাদক তারিক ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, শহীদ ভাষাসৈনিক আনোয়ার হোসেন সাতক্ষীরার কৃতী সন্তান। তিনি জেলার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ১৯৩০ সালে নানাবাড়ি বুধহাটা গ্রামে তাঁর জন্ম। বাবা কনুই গাজী ও মা পরীজান বিবি। তিন ভাইয়ের মধ্যে আনোয়ার হোসেন ছিলেন সবার বড়। মেধাবী আনোয়ার হোসেন বাড়িসংলগ্ন বুধহাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। বুধহাটা বিবিএম কলেজিয়েট বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার একপর্যায়ে তিনি খুলনা জিলা স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৪৬ সালে এসএসসি পাস করেন। খুলনার বিএল কলেজে পড়াকালে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ খুলনার তৎকালীন গান্ধী পার্কে (বর্তমানে হাদিস পার্ক) ভাষা আন্দোলনের পক্ষে ইশতেহার পাঠ করেন। এরপরই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। কয়েক দিন পর তিনি মুক্তি পান। পরে ভাষা আন্দোলনের মিছিল থেকে ১৯৪৯ সালে পুলিশ আবারও গ্রেপ্তার করে প্রথমে তাঁকে কোতোয়ালি থানায় রাখা হয়, পরে নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী কারাগারে।

সেখানে পাকিস্তান সরকারের নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখেন তিনি। একপর্যায়ে ১৯৫০ সালে ২৪ এপ্রিল রাজশাহী জেলে খাপড়া ওয়ার্ডে গুলি চালানো হয়। তাতে সাতজন কারাবন্দী নিহত হন। তাঁদের মধ্যে ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেনও ছিলেন। তাই আমরা বিশ্বাস করি, মাতৃভাষা রক্ষার আন্দোলনে ভাষাসৈনিক আনোয়ার হোসেন দেশের প্রথম শহীদ। অথচ রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো স্বীকৃতি নেই। আমাদের দাবি, শহীদ আনোয়ার হোসেনকে দেশের প্রথম ভাষাসৈনিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করা হোক।

সভাপতি, সাতক্ষীরা বন্ধুসভা