দৈনন্দিন জীবন এবং মার্কেটিংয়ে এআই ব্যবহার

এআইকে আলাদা একটা ইন্ডাস্ট্রি বলা যায়। যেখানে সব সেক্টরের জন্য সমাধান রয়েছে। এআইকে ভালোভাবে ব্যবহার করা গেলে খরচ অনেকাংশে কমে আসে। বিশেষ করে পড়াশোনা, সমস্যা সমাধান, মার্কেটিংসহ প্রায় সব ক্ষেত্রে। এত দিন যেসব কাজ অসম্ভব মনে হতো, সেগুলোই এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব অল্প খরচে সম্ভব করা যাচ্ছে।

প্রথম আলো বন্ধুসভার ভার্চ্যুয়াল টেক শোর ষষ্ঠ পর্বের আলোচনার বিষয় ছিল ‘এআই ইন ডেইলি লাইফ অ্যান্ড মার্কেটিং’। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড অনার মুঠোফোনের সৌজন্যে ১১ জুন রাত সাড়ে আটটায় এটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি বন্ধুসভার ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

আলোচক হিসেবে ছিলেন মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান নগদের এআই লিড এবং বিজ্ঞাপন বিরতির ফাউন্ডার অ‍্যান্ড সিইও মো. আবদুর রউফ। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ সম্রাট।

দৈনন্দিন জীবনে এআই
দৈনন্দিন জীবনে এআইর ব্যবহার নিয়ে আবদুর রউফ বলেন, ‘ধরেন আপনি একটা পোশাক পরলেন। সেটার ছবি তুলে বা ভিডিও করে যদি চ্যাটজিপিটিকে জিজ্ঞেস করেন, এটা মানাচ্ছে কি না। সেটার কিন্তু একটা পরামর্শ পাবেন। আবার ধরেন আপনি বাজারে আম কিনতে গেলেন। ভিডিও কলে এআইকে বললেন কোন আমটা ভালো হবে। এআই এখানে একটা পরামর্শ দেবে। যদিও এখনো এতটা পারফেকশন আসেনি। প্রতিনিয়ত যেভাবে আপডেট হচ্ছে, পারফেকশন চলে আসবে।’

‘আপনি পড়াশোনায় কোনো একটা টপিক পারছেন না। চ্যাটজিপিটিকে জিজ্ঞেস করলে সব উত্তর দিয়ে দেবে। এমনকি আইইএলটিএসের চর্চাও আপনি এআইয়ের সঙ্গে করতে পারবেন। প্রতিদিনকার জীবনের অসংখ্য সমস্যা আমরা চাইলেই এআই দিয়ে সমাধান করতে পারি।’

মার্কেটিংয়ে এআই ব্যবহার
আজকাল বিজ্ঞাপন বানানোর ক্ষেত্রে এআই ব্যবহার করা যাচ্ছে জানিয়ে আবদুর রউফ বলেন, ‘বিজ্ঞাপন বানানোর ক্ষেত্রে এআই ব্যবহার অনেক বেশি হচ্ছে। এতে অনেক খরচ কমে যাচ্ছে। মিউজিক বানানোর ক্ষেত্রে এআই ব্যবহার করা যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন সময়, কোন বিজ্ঞাপনটা দিলে ভালো সাড়া ফেলবে—এই বিশ্লেষণধর্মী কাজও এআইর মাধ্যমে করা যাচ্ছে। এমনকি আপনি যদি এআইকে জিজ্ঞেস করেন যে মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আমার কোনো আইডিয়া নেই, কীভাবে আমি এখানে উন্নতি করব? এআই সেটারও একটা সুন্দর পরামর্শ বা গাইডলাইন দেবে। মোটকথা, আপনাকে প্রশ্নের মাধ্যমে সব তথ্য জেনে নিতে হবে।’

এআই ব্যবহারের পজিটিভ ও নেগেটিভ দিক
পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত যত প্রযুক্তি আবিষ্কার হয়েছে, সবগুলোরই শুরুতে ভালো এবং ক্ষতিকর—উভয় দিক ছিল উল্লেখ করে আবদুর রউফ বলেন, ‘এআইয়ের ক্ষেত্রে পজিটিভের পাশাপাশি নেগেটিভ বিষয়টা খুব বেশি জোরালো হচ্ছে। এখন যে কেউ চাইলেই ফেক ভিডিও (ডিপফেক) খুবই সহজে তৈরি করতে পারছে। সবকিছু হাতের নাগালে চলে আসছে। বিশেষ করে কারও অনুমতি ছাড়া তাঁর ছবি খারাপ কাজে ব্যবহার করা।

এর সমাধানে এআই বিশেষজ্ঞ আবদুর রউফ বলেন, এআই খাতে সরকারিভাবে একটি নীতিমালা দ্রুত সময়ের মধ্যে গড়ে তোলা উচিত। যাতে এ বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করা যায়। বিভিন্ন টেকনোলজি ফার্মগুলোও চেষ্টা করছে এ ব্যাপারে কাজ করার। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।

পজিটিভ দিক নিয়ে আবদুর রউফ বলেন, ‘মানুষের দৈনন্দিন জীবনে লাইফস্টাইল থেকে শুরু করে সবকিছু এআই সহজ করে দিচ্ছে। আগে যে কাজ করতে দুই-তিন দিন লেগে যেত, সেটাই এখন কয়েক মিনিটে করা যাচ্ছে। আগে কোনো কিছুর তথ্য জানতে হলে গুগলে সার্চ দিতে হতো। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পাওয়া যেত। এখন চ্যাটজিপিটিতে একই জিনিস জানতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে একটা সুন্দর উত্তর চলে আসে।’

উল্লেখ্য, লাইভ শোটির প্রতিটি পর্বে রয়েছে অনারের বিভিন্ন প্রোডাক্ট কিংবা প্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ টেক কুইজ। প্রতি পর্বে কুইজে অংশগ্রহণকারী ভাগ্যবান একজন বিজয়ী জেতার সুযোগ পাচ্ছেন অনার এক্সসেভেন লাইট ইয়ারবাডস। ৪ জুন অনুষ্ঠিত পঞ্চম পর্বে কুইজ বিজয়ী হয়েছেন নাহিদ হাসান।