রাবিতে চড়ুইভাতি ও সান্ধ্য আড্ডা

চড়ুইভাতি
ছবি: বন্ধুসভা

মাত্র এক দিন আগেই বেশ বড় পরিসরে ক্যারিয়ার ও বিতর্কবিষয়ক কর্মশালা শেষ হলো। সেদিন সন্ধ্যায় বন্ধুদের আবদার, ‘খাওয়াদাওয়া চাই’। সবাই একমত, একটা খাওয়ার আয়োজন করতেই হবে। সাবেক সভাপতি সুরুজ সর্দার জানালেন, রান্নার দায়িত্ব তাঁর। এমনিতেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বন্ধুসভার কোনো অতিথি আসবে আর সুরুজের হাতের রান্না খাবে না, এটি বিরল ঘটনা। জাতীয় পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক জাফর সাদিক পেশাগত কাজে যেহেতু রাজশাহীতে এসেছেন, তাই সুরুজের রান্না তো খেতেই হবে।

যে–ই কথা সেই কাজ। সিদ্ধান্ত হলো ১৮ মে বৃহস্পতিবার রাতেই হবে চড়ুইভাতির আয়োজন। জাতীয় পর্ষদের সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে এই আয়োজন হওয়ায় বাজারের খরচ দেওয়ার দায়িত্বও তাঁর! এটা নিয়ম না হলেও বন্ধুদের আবদারে তিনি রাজি হয়ে গেলেন। হিসাব কষে বাজারের খরচ তুলে দেন খণ্ডকালীন পাচক সুরুজ সর্দারের হাতে। মেনু হবে মাংস, আলু ভর্তা, ডাল, ভাত ও সালাদ। সেদিনই বাজারের জন্য প্রস্তুতি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলে রান্নার আয়োজন। কিন্তু বিধিবাম! সন্ধ্যা হতেই বিদ্যুৎ–বিভ্রাট, সবার মধ্যে ভাবনা, কী হয়, কী হয়! কিন্তু সুরুজ সর্দার অনড়, রান্না হবেই, হলোও তা–ই! বর্তমান সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক তুহিনূজ্জামানসহ আরও কয়েকজন বন্ধুর সহযোগিতায় যথাসময়ে রান্নার আয়োজন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় রাত নয়টায় ভোজন পর্বের আয়োজন। সবাই পেটপুরে খেয়েও দেখা গেল হাঁড়িভর্তি ভাত বেঁচে গেছে!

চড়ুইভাতির এই আয়োজনে আরও যোগ দেন রাবি বন্ধুসভার উপদেষ্টা রাকিবুল ইসলাম নীরব, টিআইবির পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম, কো–অর্ডিনেটর তৌহিদুল ইসলাম, রাবি বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া জেসমিনসহ কমিটির অন্যান্য বন্ধুরা।

রাবি বন্ধুসভার বন্ধুদের একাংশ
ছবি: বন্ধুসভা

খাওয়ার পর্ব শেষে আড্ডায় মেতে ওঠেন সবাই। এ সময় ঢাকা থেকে ভিডিও কলে যুক্ত হন জাতীয় পর্ষদের সভাপতি উত্তম রায়। তিনি রাবি বন্ধুসভার চমৎকার সব আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘রাবি বন্ধুসভা সারা দেশের জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করছে। জাতীয় পর্ষদ তাদের যেকোনো আয়োজনে পাশে ছিল, থাকবে।’

জাতীয় পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক জাফর সাদিক বলেন, ‘রাবি বন্ধুসভা ব্যতিক্রমধর্মী সব আয়োজনের মধ্য দিয়ে তাদের স্বাতন্ত্র্য প্রমাণ করেছে। এবার সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। বন্ধুদের ভালো কাজের নিবেদনই তাদের ভবিষ্যৎ–জীবনে সফলতার চাবিকাঠি হবে। তাই ভালো কাজের এই প্রেরণা কখনোই ছাড়া যাবে না।’

উপদেষ্টা রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘বন্ধুসভার সব কাজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান বৃদ্ধি করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব সময় বন্ধুসভার ভালো কাজের জন্য গর্ব করে।’ সভাপতি শাহাবুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমরা বরাবরই ব্যতিক্রমী প্রোগ্রাম আয়োজন করে থাকি। ভবিষ্যতে আরও সুন্দর প্রোগ্রামের মাধ্যমে রাবি বন্ধুসভা এগিয়ে যাবে।’

আড্ডায় উপস্থিত বন্ধুরা তাঁদের অনুভূতি ব্যক্ত করে সব সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সবার কথা শেষে এই আড্ডা শেষ হয়। কিন্তু একদল বন্ধুর সঙ্গে পদ্মাপাড়ে মধ্যরাতের আড্ডা যেন আর শেষ হয় না! গানে গানে রাত গভীর হয়। সবশেষে মশকবাহিনীর ভালোবাসায় সিক্ত শরীর হার মানে, ফিরতে হয় যাঁর যাঁর নিবাসে।

সাংগঠনিক সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা