বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি পরিদর্শন ও পাঠচক্রের আসর

বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে নোয়াখালী বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসরছবি: বন্ধুসভা

বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ—একই সূত্রে গাঁথা। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ, ত্যাগ–তিতিক্ষা, রাজনৈতিক জীবন, দেশপ্রেমের চিন্তাভাবনা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) নিজস্ব কারিগরি দক্ষতায় প্রস্তুত করেছে ‘বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি’।

বিআরটিসির শীতাতপনিয়ন্ত্রিত একটি বাসে স্থাপিত এই ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি বর্তমানে নোয়াখালীতে অবস্থান করছে। তাই নোয়াখালী বন্ধুসভা বছরের ১৭তম পাঠচক্রের আসর করেছে ভ্রাম্যমাণ এই লাইব্রেরিতে। একই সঙ্গে দারুণ এ লাইব্রেরি পরিদর্শন করেন বন্ধুরা।

৬ জুন বিকেলে নোয়াখালী বন্ধুসভার বন্ধুদের বিশেষ অনুরোধে বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিটি অবস্থান করে জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। বন্ধুরা একে একে উঠে পড়েন বাসটিতে। বাসের ভেতরের মনোরম পরিবেশ মুগ্ধ করে সবাইকে। লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসসমৃদ্ধ দেশি-বিদেশি লেখকের অনেক প্রবন্ধ, উপন্যাস ও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সংরক্ষিত আছে। এ ছাড়া অনেক আলোকচিত্র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজের লেখা অনেক বইও রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির সামনে নোয়াখালী বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

লাইব্রেরিটি ঘুরে দেখার পর কিছু বই বাছাই করে নেন বন্ধুরা। পরিচয়পর্ব শেষে প্রথমেই পাঠ করা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা ‘জনক আমার নেতা আমার’ বইয়ের ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ শিরোনামের অংশটুকু। এরপর একে একে পাঠ করা হয় প্রথমা প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত ‘একাত্তরের চিঠি’ বইটি থেকে কয়েকটি চিঠি এবং সাজেদুল আউয়ালের লেখা ‘বঙ্গবন্ধুর সংস্কৃতি ভাবনা’ বইয়ের কিছু অংশ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের জাতির পিতা, স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার। প্রত্যেক বাংলাদেশির উচিত বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিস্তারিত ধারণা রাখা। বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ব্যাপারটিকে আরও সহজ করে তুলেছে। এখানে আছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দেশি-বিদেশি লেখকের লেখা শত শত বই, আলোকচিত্র ও তথ্যচিত্র।
বন্ধু ইমতিয়াজ দোলন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে সবার একবার হলেও আসা উচিত। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এত বই সাধারণত একসঙ্গে অন্য কোথাও দেখা হয়নি। প্রতিটি জেলায় যদি একটা করে বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি থাকত, তাহলে খুব ভালো হতো।’

বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি পরিদর্শন করেন নোয়াখালী বন্ধুসভার বন্ধুরা
ছবি: বন্ধুসভা

বন্ধু রাফসান লাইব্রেরিতে এসে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে মানুষকে জানানোর জন্য বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি বাংলাদেশ সরকারের অনন্য এক উদ্যোগ।
সহসাংগঠনিক সম্পাদক তাজকির হোসেন বলেন, ‘নোয়াখালী বন্ধুসভা বরাবরই ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করে। এ রকম একটি পাঠচক্রে অংশগ্রহণ করতে পেরে ভাগ্যবান অনুভব করছি। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিভিন্ন বই, ডকুমেন্টারি ও তথ্যসংবলিত স্থিরচিত্রের এমন একটি জ্ঞানভাণ্ডার সত্যিই দারুণ উদ্যোগ।’

সভাপতি আসিফ আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু হিমালয়ের মতো বড়। তাঁর সম্পর্কে যতই পড়ি, পড়া শেষ হবে না। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক বই পড়া হয়েছে। এখানে এসে দেশি-বিদেশি লেখকদের আরও অনেক নতুন বই সম্পর্কে জানার সুযোগ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে এসে যে কারোই বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে একটা ভালো ধারণা তৈরি হবে।

পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শিমুল, দপ্তর সম্পাদক ধ্রুব ভূঁইয়া, প্রচার সম্পাদক সানি তামজিদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাহিদা ইতু, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক আরাফাত শিহাব, কার্যকরী সদস্য নয়ন কুরী, বন্ধু হামিম আহমেদ, জয়দেব সাহা, পারভেজ হোসেনসহ অন্য বন্ধুরা।

পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা