চার্লস ডিকেন্সের উপন্যাস ‘অলিভার টুইস্ট’ নিয়ে পাঠচক্র

আবদুল লতীফ খান উচ্চবিদ্যালয়ে চট্টগ্রাম বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসরছবি: বন্ধুসভা

বিখ্যাত লেখক চার্লস ডিকেন্সের কিশোর উপন্যাস ‘অলিভার টুইস্ট’ নিয়ে পাঠচক্র করে চট্টগ্রাম বন্ধুসভা। ১৮ সেপ্টেম্বর নগরীর মোহরার আবদুল লতীফ খান উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে এটি অনুষ্ঠিত হয়। এটি চট্টগ্রাম বন্ধুসভার হিরন্ময় কথকতা সিরিজ পাঠচক্রের ১০তম আসর।

আলোচক হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান খান। তিনি বইটি সম্পর্কে বলেন, ‘অলিভার টুইস্ট’ উপন্যাসটি অনেক পুরোনো হলেও বেশ শিক্ষণীয়। এটি ১৮৩৭ থেকে ১৮৩৯ সালের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। এটি ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস, যা ভিক্টোরিয়ান যুগের সামাজিক অবিচার ও বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে।

আবদুল লতীফ খান উচ্চবিদ্যালয়ে চট্টগ্রাম বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসর।

উপন্যাসের প্রধান চরিত্র অলিভার টুইস্ট। সে একটি ওয়ার্কহাউসে (অনাথ ও দরিদ্রদের জন্য সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র) জন্মগ্রহণ করে। জন্মের পরই মা মারা যায় এবং সে সম্পূর্ণ একা হয়ে পড়ে। ওয়ার্কহাউসে অলিভারকে কঠিন পরিবেশে বেড়ে উঠতে হয়। সেখানে তাকে সামান্য খাবার দিত এবং কঠোর পরিশ্রম করানো হতো। একটি দৃশ্যে, অলিভার আরও কিছু খাবার চাওয়ার সাহস দেখায়, যার জন্য তাকে ওয়ার্কহাউস থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপর অলিভার লন্ডনে পালিয়ে যায়। সেখানে একদল কিশোর পকেটমারের দলে ভিড়ে যায়, যাদের প্রধান ছিল চতুর অপরাধী ফ্যাজিন।

এই দলে পরিচয় হয় আর্টফুল ডজার ও বিল সাইকসের মতো কুখ্যাত অপরাধীদের সঙ্গে। অলিভারকে তারা পকেটমারি ও চুরি করার প্রশিক্ষণ দেয়। কিন্তু অলিভারের নিষ্পাপ মন তাতে সায় দেয় না। একদিন একটি চুরির চেষ্টাকালে সে আহত হয় এবং তাকে এক উদার ও দয়ালু ভদ্রলোক মি. ব্রাউনলো উদ্ধার করে। অলিভার তার কাছে আশ্রয় পেয়ে নতুন জীবন শুরু করে। অন্যদিকে ফ্যাজিনের দল অলিভারকে আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। অলিভারের জীবন তখন ভালো ও মন্দ মানুষের মধ্যে দুলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তার প্রকৃত পারিবারিক পরিচয় প্রকাশ পায় এবং সে তার হারানো আত্মীয়দের খুঁজে পায়। এর মাধ্যমে সে অপরাধের জগৎ থেকে মুক্তি লাভ করে।

কুইজ বিজয়ীদের উপহার দেওয়া হয় ‘কিশোর আলো’ ম্যাগাজিন।

আবদুল লতীফ খান উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম মামুন বলেন, ‘বই হচ্ছে মনের খোরাক। বর্তমানে শুধু সিলেবাসভুক্ত বই পড়া এবং প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশের কারণে শিক্ষার্থীরা বইয়ের মূল আনন্দ নিতে পারে না। তাই সবার উচিত সিলেবাসের বাইরেও বিভিন্ন বই পড়া, যাতে তাদের জ্ঞানের পরিধি বড় হয়।’

পাঠচক্র সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম বন্ধুসভার কার্যনির্বাহী সদস্য জয় চক্রবর্তী। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সহসমন্বয়কারী ও বইমেলা সম্পাদক শান্ত বড়ুয়া। পাঠচক্র শেষে কুইজ অনুষ্ঠিত হয়। বিজয়ীদের উপহার দেওয়া হয় ‘কিশোর আলো’ ম্যাগাজিন।

কার্যনির্বাহী সদস্য, চট্টগ্রাম বন্ধুসভা