‘একেই কি বলে সভ্যতা?’ প্রহসন নিয়ে নোয়াখালী বন্ধুসভার পাঠচক্র
রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে একদিন যিনি মানুষের সেবায় আত্মনিবেদিত ছিলেন, আজ তাঁকেই সমাজ ছুড়ে ফেলে দিল পথের পাশে। চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এই নির্মম দৃশ্য যেন আমাদের বিবেককে প্রশ্ন করে, এই কি তবে সভ্যতার চূড়ান্ত রূপ? একদিকে উঁচু দালান আর চকমকে গাড়ির ভিড়, অন্যদিকে মানবিকতার করুণ পরিণতি, এটাই কি আধুনিক সভ্যতা?
মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচিত ‘একেই কি বলে সভ্যতা?’ প্রহসন নিয়ে পাঠচক্রের আসর করেছে নোয়াখালী বন্ধুসভা। ২৭ জুন বিকেলে প্রথম আলো নোয়াখালী অফিসে এটি অনুষ্ঠিত হয়। সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক সানি তামজীদ। পরিচয় পর্ব শেষে শুরু হয় মূল আলোচনা।
‘একেই কি বলে সভ্যতা’ একটি ব্যঙ্গাত্মক নাট্যরচনা, যেখানে তৎকালীন সমাজে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ, মূল্যবোধের অবক্ষয় ও তরুণদের চারিত্রিক বিচ্যুতিকে লেখক তীব্রভাবে বিদ্রূপ করেছেন। নবকুমার নামের এক শিক্ষিত তরুণ বিদেশফেরত হয়ে নিজ সংস্কৃতি, পরিবার ও ধর্মকে তাচ্ছিল্য করে পশ্চিমা সভ্যতাকেই শ্রেষ্ঠ মনে করতে শুরু করেন। এতে মাইকেল মধুসূদন দত্ত দেখিয়েছেন, প্রকৃত সভ্যতা শুধু পোশাকে বা কথায় নয়; তা আচরণ, মূল্যবোধ ও দায়িত্ববোধে প্রকাশ পায়।
সাংগঠনিক সম্পাদক সানি তামজীদ বলেন, ‘প্রহসনটিতে মাইকেল মধুসূদন দত্ত তৎকালীন সময়ের যুবকদের পথভ্রষ্ট হওয়া, সমাজ ও ধর্ম নিয়ে তাঁদের অনধিকার চর্চার বিষয়টি ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করেছেন। এটি আজও সমান প্রাসঙ্গিক।’
দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নবকুমারের বাবার চরিত্রের মাধ্যমে একজন পিতার সন্তানের চলাফেরা ও সঙ্গ সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। এটি আজকের সমাজেও অত্যন্ত জরুরি এক বার্তা বহন করে।’
পাঠচক্র শেষে সাধারণ সম্পাদক মো. শিমুল বন্ধুসভার পরবর্তী কার্যক্রম বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন এবং পাঠচক্রের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। পাঠচক্রে আরও উপস্থিত ছিলেন বন্ধু শান্ত চন্দ্র দে, এ এস এম সায়েমসহ অন্য বন্ধুরা।
দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা