এক রাস্তার শহর হিসেবে বেশ পরিচিত নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদী। সম্প্রতি এই প্রধান সড়কের চার লেনের কাজ প্রায় শেষের পথে। সড়কটি চার লেনে উত্তীর্ণ হওয়ায় অনেকেই ভুলভাবে রাস্তা পার হচ্ছেন। রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। এ বিষয়ে সচেতনতা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ‘রাস্তা পার হই সাবধানে’ শিরোনামে নোয়াখালী বন্ধুসভা আয়োজন করে আলোচনা সভা।
৫ আগস্ট বিকেলে প্রথম আলো নোয়াখালী অফিসে এটি অনুষ্ঠিত হয়। সভা শুরু হয় পরিচয় পর্বের মাধ্যমে। এরপর বন্ধুদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, নোয়াখালীর প্রধান সড়কে চার লেন দৃশ্যমান হওয়ায় আপনার অনুভূতি কেমন? একে একে সবাই নিজেদের ভালো লাগার অনুভূতি ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে চার লেন হওয়ার ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলোর কথা তুলে ধরেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রাকিব সুবিধাগুলো বর্ণনা করে বলেন, ‘চার লেন হওয়াতে নোয়াখালীতে অনেকাংশে যানজট কমে যাবে। অপর দিকে আমাদের উল্টো পথে গাড়ি চালানোর জন্য সবাইকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। রাস্তা পারাপারের নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।’
অর্থ সম্পাদক উম্মে ফারহীন বলেন, ‘সড়কে এখনো ফুটওভারব্রিজ ও জেব্রাক্রসিং না থাকায় রাস্তা পার হতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’ বন্ধু নুসরাত জুঁই বলেন, ‘চার লেন হওয়ার পর থেকে রিকশাভাড়া অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। ২০ টাকার ভাড়া চাইছে ৪০ টাকা! এটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
রাস্তা পারাপারের সময় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান ও সৃষ্ট সমস্যাগুলো নিয়ে বক্তব্য দেন উপদেষ্টা কামাল হোসেন। এক পর্যায়ে প্রথম আলোতে প্রকাশিত রাস্তার পারাপারের সচেতনা নিয়ে কয়েকটি ফিচার পাঠ করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জ্যানিসা আফরোজ, মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক আফরিনা আনিকা ও বন্ধু নাহিদা ইতু।
বন্ধুদের আলোচনায় ওঠে আসে, কোনোভাবেই ফুটপাত ছেড়ে রাস্তায় হাঁটা যাবে না। যেখানে ফুটপাত নেই, সেখানে অবশ্যই সামনে-পেছনে তাকিয়ে, খেয়াল রেখে রাস্তায় চলাচল করতে হবে। চলাচলের সময় কখনোই মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না। ফোন কিংবা মেসেজ পাঠানোর প্রয়োজন হলে এক পাশে দাঁড়িয়ে নিরাপদ স্থান থেকে মোবাইল ব্যবহার করতে হবে। ওভারব্রিজ ও জেব্রা ক্রসিং অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। রাস্তা পার হওয়ার সময় অবশ্যই সেই চিরায়ত নিয়ম প্রথমে ডানে, তারপরে বাঁয়ে; তারপরে পেছনে, তারপরে সামনে, সব শেষে ডানে তাকিয়ে রাস্তা পার হতে হবে। চৌরাস্তা কিংবা যেখানে রাস্তায় ডিভাইডার নেই, সেখানে খুবই সতর্কভাবে রাস্তা পার হতে হবে। শিশুদের কোনোভাবে একা রাস্তা পার হতে দেওয়া যাবে না। ভারী জিনিসপত্র কিংবা স্কুলব্যাগ নিয়ে কখনোই রাস্তার মাঝখান দিয়ে দৌড়ে পার হওয়া যাবে না।
সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আসিফ আহমেদ। আরও উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি আবু তাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হোসেন, বইমেলা সম্পাদক আশরাফুল মতিন, কার্যনির্বাহী সদস্য ধ্রুব ভূঁইয়া, বন্ধু মেহেরাজ ফয়সাল, নাফিস আহমেদ, সামি তামজিদসহ আরও অনেকে।
সাধারণ সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা