নদীপাড়ের মানুষের জীবনসংগ্রামের গল্প ‘পদ্মা নদীর মাঝি’

শাবিপ্রবি বন্ধুসভার পাঠচক্রের আসরছবি: বন্ধুসভা

‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় পদ্মা নদীর তীরের জেলে-মাঝিদের রুক্ষ, দারিদ্র্যপীড়িত কিন্তু প্রাণবন্ত জীবনকে গভীর বাস্তবতার সঙ্গে তুলে ধরেছেন। কুবেরের সংসার, তার অন্তর্দ্বন্দ্ব, কপিলার প্রতি আকর্ষণ ও সামাজিক পরিবেশের টানাপোড়েন কাহিনিকে লেখক এগিয়ে নিয়ে যায়। হোসেন মিয়ার গড়া ময়নাদ্বীপ এখানে শুধু নতুন বসতি নয়, বরং শোষণমুক্ত, মানবিক সমাজের এক স্বপ্ন ও প্রতীক। আঞ্চলিক ভাষার স্বাভাবিক ব্যবহার, প্রকৃতিনির্ভর জীবন, মানুষের আবেগ ও প্রবৃত্তির নির্মোহ উপস্থাপনা—সব মিলিয়ে উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যে সৃষ্ট এক অসাধারণ আঞ্চলিক উপন্যাস।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাস নিয়ে পাঠচক্র করেছে শাবিপ্রবি বন্ধুসভা। ২৫ নভেম্বর দুপুরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি সেন্টার ভবনের দ্বিতীয় তলায় এটি অনুষ্ঠিত হয়।

পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক ইয়ারমিন আক্তারের সঞ্চালনায় উপন্যাসটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন প্রচার সম্পাদক সাবিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘“পদ্মা নদীর মাঝি” শুধু একটি উপন্যাস নয়, এটি নদী ও মানুষকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সমগ্র জীবনের এক বাস্তব চিত্র। এখানে আমরা দেখি কুবের, যে সাধারণ এক মাঝি হলেও তার জীবনের ছোট ছোট সংগ্রাম, টানাপোড়েন, স্বপ্ন আর হতাশার মধ্য দিয়ে পুরো গ্রামীণ জীবনের বাস্তবতাকে লেখক সামনে নিয়ে আসেন।’

উপন্যাসে পদ্মা নদী শুধু প্রাকৃতিক উপাদান নয়, এটি চরিত্রগুলোর জীবিকা, সম্পর্ক, সুখ-দুঃখ ও অস্তিত্বের প্রতীক। নদীর খেয়ালিপনা যেমন মাঝিদের জীবনকে প্রভাবিত করে, তেমনি সমাজের দারিদ্র্য, শোষণ ও অনিশ্চয়তাও তাদের নিয়তির অংশ হয়ে দাঁড়ায়।

পাঠচক্রের আসরে উপস্থিত ছিলেন বন্ধু শাফিনুর ইসলাম, সাবিনা আক্তার, ইয়ারমিন আক্তার, মৃদুল রাজবংশী, মো. আলামিন, তৌহিদুল ইসলাম, দুর্জয়সহ অন্য বন্ধুরা।

সভাপতি, শাবিপ্রবি বন্ধুসভা