তর্ক থেকেই বিতর্ক। তবে সেটা শুদ্ধ, স্বচ্ছ ও সুন্দর। বিতর্ক এমনই এক শক্তিশালী মাধ্যম, যা কেবল নিজের মত প্রতিষ্ঠা নয়; বরং অন্যের মতকে প্রাধান্য দিতে শেখায়। যুক্তিবোধের বিতর্ক একজন মানুষকে সত্য এবং সাহসী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তুলে।
অনুষ্ঠিত হলো ভৈরব বন্ধুসভার আয়োজনে কলেজ পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা। গত ৩১ অক্টোবর শুরু হয়ে ৯ নভেম্বর চূড়ান্ত পর্বের মাধ্যমে শেষ হয় আয়োজন। মোট চার পর্বে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ভৈরবের তিনটি কলেজের ১১ বিতার্কিক। অংশগ্রহণকারী কলেজগুলো হলো সরকারি হাজী আসমত কলেজ, রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজ ও শিমুলকান্দি ডিগ্রি কলেজ।
প্রথম রাউন্ডে বিতর্কের তিনটি বিষয় ছিল। এক, মাদক নির্মূলে আইনের প্রয়োগের চেয়ে পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা অধিক জরুরি; দুই, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ভালোর চেয়ে মন্দ বেশি; তিন, মুঠোফোন আসক্তি শিশু-কিশোরদের স্বাভাবিক বিকাশের প্রধান অন্তরায়। চূড়ান্ত পর্বের বিষয় ছিল ‘ভেজাল পণ্য রোধে কঠিন আইনের চেয়ে ব্যবসায়ীর নৈতিকতার উন্নয়ন জরুরি’।
চার পর্বে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন মতিউর রহমান, মো. শহীদুল্লাহ, লুবনা হক ও সাইফুল ইসলাম। বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন সুমন মোল্লা, মতিউর রহমান, নজরুল ইসলাম, জোনায়েদ বোস্তামী, মনিরুল ইসলাম, ওয়াহিদা আমিন, ইমরান হোসাইন, সুবর্ণা ফেরদৌসী, সুমাইয়া হামিদ, জলি বদন তৈয়বা, কাজী জাফর হোসেন ও ফারহানা বেগম।
প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজ এবং রানার্সআপ হয় সরকারি হাজী আসমত কলেজ। শ্রেষ্ঠ বক্তার পুরস্কার অর্জন করেন চ্যাম্পিয়ন দলের বিতার্কিক সাদিয়া আফরিন। এ ছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সব বিতার্কিককে কিশোর আলো ম্যাগাজিন ও সনদ প্রদান করা হয়।
চার পর্বে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সাধারণ সম্পাদক মানিক আহমেদ, অর্থসম্পাদক নাফিস রহমান, পাঠচক্র ও পাঠাগার সম্পাদক তানসি নাহার, কার্যনির্বাহী রিফাত হোসেন ও বন্ধু জান্নাতুল মিশু।
প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক সুমন মোল্লা বলেন, ‘বিতর্ক অন্যের মতকে গুরুত্ব দিতে শেখায়। প্রতিটি দল বিপরীত দলের প্রতি সম্মান রেখেই তর্কযুদ্ধ করে। এই শিল্প মুক্তচিন্তার অধিকারী হিসেবে তৈরি করছে শিক্ষার্থীদের।’
সভাপতি প্রিয়াংকা বলেন, ‘ভৈরব তর্কের শহর হিসেবে বেশ প্রচলিত। কিন্তু এখন ভৈরব বিতর্কের শহর। ভৈরব বন্ধুসভার মাধ্যমে বিতর্কচর্চার এক জোয়ার এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা সংগঠনের মধ্যে ছড়াচ্ছে। সবাই সহশিক্ষা কার্যক্রমে বিতর্কের ওপর জোর দিচ্ছে। সৃষ্টি করছে বিতার্কিক। এতে শিক্ষার্থীদের ভিত্তি বেশ মজবুত হচ্ছে।’
আয়োজনে সহযোগী হিসেবে ছিল ভৈরব বাজারের ব্রাদার্স শপিং সেন্টার। প্রতিটি পর্ব ভৈরব বন্ধুসভার ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। কারিগরি দিক সমন্বয় করেন নাহিদ হোসাইন, নাবিল রহমান ও আনাস খান।
বন্ধু, ভৈরব বন্ধুসভা