হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা

নোয়াখালী বন্ধুসভার উদ্যোগে হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা।

যে লেখে, সে মরে না; শুধু হারিয়ে যায় কাগজের পাতায়, মনে ও হৃদয়ে। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই, সেদিন আকাশটা অনেক ভারাক্রান্ত ছিল। কারণ, আকাশ নিয়ে গিয়েছিল একজন হিমু, একজন মিসির আলি, একজন স্বপ্নবান লেখক গল্পের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদকে।

গতকাল শনিবার ছিল বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত কথাশিল্পী, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, চলচিত্র নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ১৩তম প্রয়াণদিবস। দিনটিকে স্মরণীয় করতে নোয়াখালী বন্ধুসভা আয়োজন করে একটি অনলাইন আড্ডা এবং আলোচনা সভা। রাত নয়টায় অনলাইন গুগল মিট অ্যাপে এটি অনুষ্ঠিত হয়। সঞ্চালনা করেন পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক শাহিদা রেশমি।

পরিচয়পর্বের পর শুরু হয় মূল আলোচনা। সাংগঠনিক সম্পাদক সানি তামজীদ বলেন, ‘আমার পছন্দের এবং খুবই প্রিয় লেখক হলেন হুমায়ূন আহমেদ। ১৯৭২ সালে ‘নন্দিত নরকে’ উপন্যাস দিয়ে সাহিত্যাঙ্গনে পরিচিতি শুরু হয় তাঁর। এরপর ‘আগুনের পরশমণি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘হিমুসমগ্র’, ‘মিসির আলি’সহ বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী সব রচনা সৃষ্টি করেছেন।

হুমায়ূন আহমেদের লেখা বাংলা সাহিত্যে এক অন্যমাত্রা এনে দিয়েছে। আজও পাঠক প্রতি বইমেলায় তাঁর লেখা বই খোঁজেন। জীবনের বাস্তবিক কোনো সমস্যায় মিসির আলিকে স্মরণ করে অথবা হলুদ পাঞ্জাবি পরা হিমুর মতো জীবনের সহজ-সরল হিসাব কষে। হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয়তার মূল কারণ তাঁর লেখার প্রতিটি বাস্তববাদী চরিত্র আর সংলাপের জন্য।

সাধারণ সম্পাদক মো. শিমুল বলেন, ‘বন্ধুর পরামর্শে প্রথম হুমায়ূন আহমেদের লেখা বই ‘হিমুসমগ্র’ পড়ি। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত তাঁর লেখার একনিষ্ঠ একজন পাঠক এবং তাঁর তৈরি করা নাটকের একজন দর্শক। ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের বাকের ভাই চরিত্র আমাকে এখনো সমানতালে মুগ্ধ করে রেখেছে।’

সাংস্কৃতিক সম্পাদক অনিক ভৌমিক এবং দপ্তর সম্পাদক নয়ন চন্দ্র কুরী হুমায়ূন আহমেদের লেখা জনপ্রিয় ‘ভাঙা ঘরের ভাঙা চালা’ গানটি পরিবেশন করেন।

সহসভাপতি জেরীন ফাহমিদা বলেন, ‘“নয় নম্বর বিপদ সংকেত” গল্পটি পড়ার পর হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে বিস্তর জানতে পারি। এরপর আমার জীবনের একজন লেখক ও প্রিয় ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন তিনি। তাঁর লেখা অধিকাংশ গল্প, উপন্যাস পড়েছিস এখনো সংগ্রহ করে পড়ছি।’ এরপর তিনি হুমায়ূন আহমেদের লেখা ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’ গানটি পরিবেশন করেন।

পাঠাগার ও পাঠাগার সম্পাদক শাহিদা রেশমি বলেন, ‘চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় বইমেলা থেকে বাবা আমাকে হুমায়ূন আহমেদের ‘বোতল ভূত’ বইটি কিনে দিয়েছিলেন। গল্পের ছলে তখন এই বইটি পড়ার পর বাবাকে বলে তাঁর লেখা আরও কয়েকটি বই আনিয়েছিলাম তখন। সেই ছোট্ট থেকে আজও তাঁর বই সংগ্রহ করি, নাটক দেখি, উপন্যাস পড়ি।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজকির হোসেন ও ধ্রুব ভূঁইয়া, দুর্যোগ ও ত্রাণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া সম্পাদক নজরুল ইসলাম, বন্ধু ফাতেকুর রহমানসহ অন্য বন্ধুরা।

সাংগঠনিক সম্পাদক, নোয়াখালী বন্ধুসভা